বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, ভূতাত্ত্বিক তথ্য এবং ড্রিল স্টেম টেস্ট (ডিএসটি) অনুযায়ী শাহজাদপুর, ভোলা উত্তর ও ইলিশায় সম্ভাব্য গ্যাসের দুই দশমিক ২৩ টিসিএফ মজুদ রয়েছে। এর মধ্যে ইলিশা-১ কূপে মজুদকৃত গ্যাসের আন্তর্জাতিক বাজার মূল্য আনুমানিক ২৬ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা।’
আজ সোমবার তার সরকারি বাসভবনে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে এসব তথ্য জানিয়ে বলেন, ভোলার ইলিশা-১ কূপে প্রায় দুই শ’ বিলিয়ন ঘনফুট (বিসিএফ) গ্যাস মজুদ রয়েছে। এটি দেশের মানুষের জন্য একটি বড় সুখবর।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ইলিশা-১ কূপ থেকে প্রতিদিন গড় গ্যাস উৎপাদনের হার হবে ২০ মিলিয়ন ঘনফুট (এমএমসিএফডি)। এ হারে ২৫ থেকে ২৬ বছর এ কূপ থেকে গ্যাস উত্তোলন করা যাবে।
নসরুল হামিদ বলেন, ভোলা জেলার ইলিশা-১ কে দেশের ২৯তম গ্যাসক্ষেত্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে, যেখানে সাম্প্রতিক অনুসন্ধান প্রচেষ্টার পর গ্যাসের বিশাল মজুদ খুঁজে পাওয়া গেছে।
গ্যাস সিএনজি (কম্প্রেসড ন্যাচারাল গ্যাস) আকারে পরিবহন করা হবে এবং নিম্নচাপের সমস্যায় ভুগছেন এমন শিল্প-কারখানায় সরবরাহ করা হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘গ্যাস পরিবহনের সময় নিরাপত্তার বিষয়টিও আমরা বিশেষ গুরুত্ব দেবো।’
তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে একটি বড় ট্রেলারের মাধ্যমে ভোলা থেকে মোট ২৫ এমএমসিএফডি গ্যাস আনার জন্য একটি বেসরকারি কোম্পানির সাথে চুক্তি হয়েছে। প্রাথমিকভাবে, এটি পাঁচ এমএমসিএফডি পরিবহন দিয়ে শুরু হবে।
তিনি আরো বলেন, ‘ভোলা থেকে প্রাপ্ত গ্যাসের সর্বোত্তম ব্যবহার করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে ঢাকার আশপাশের শিল্প-কারখানায় গ্যাস সঙ্কট অনেকাংশে দূর হবে।
নসরুল হামিদ বলেন, ‘আমরা নদীর ঠিক উপরীভাগে নতুন গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার করেছি। এখান থেকে ২৫ থেকে ২৬ বছর গ্যাস পাওয়া যাবে। আমাদের একটি প্রসেস প্ল্যান্ট আছে, আরেকটি চলছে। আশা করছি দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে পাইপলাইনে গ্যাস দেয়া সম্ভব হবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ভোলা থেকে খুলনা হয়ে বরিশাল পর্যন্ত পাইপলাইন বসানো হবে। প্রাক-সম্ভাব্যতা শেষ এবং এখন সম্ভাব্যতা সমীক্ষা চলছে। ভোলায় আগেই দু’টি গ্যাসক্ষেত্র ছিল। এটি নিয়ে তিনটি গ্যাসক্ষেত্রে নয়টি কূপ থেকে গ্যাস উত্তোলন করা হচ্ছে, যার মধ্যে বোরহানউদ্দিন উপজেলার শাহাবাজপুর গ্যাসক্ষেত্রে ছয়টি কূপ, সদর উপজেলার ভোলা উত্তরে দু’টি কূপ এবং সর্বশেষ ইলিশা মাঠের ইলিশা-১ কূপ। সিলেটের পর ভোলাই একমাত্র জেলা যেখানে তিনটি গ্যাসক্ষেত্র আবিস্কৃত হয়েছে।
নসরুল হামিদ বলেন, অবশ্য ভোলার গ্যাসক্ষেত্রে প্রতিদিন ১২০ এমএমসিএফডি গ্যাস উৎপাদনের ক্ষমতা রয়েছে। ২০২৪-২৫ সালে উৎপাদন ক্ষমতা আরো বাড়বে।
তিনি বলেন, এই অঞ্চলের গ্যাস ব্যবহারের জন্য ভোলা, বরিশাল এবং ঢাকাকে কভার করে পাইপলাইনের একটি রিং বেড়া তৈরি করার পরিকল্পনা রয়েছে এবং ঢাকা, সিলেট এবং অন্যান্য জেলাকে জুড়ে আরেকটি রিং বেড়া তৈরি করা হবে। বর্তমানে দেশের ২২টি গ্যাসক্ষেত্র থেকে প্রায় দুই হাজার তিন শ’ এমএমসিএফডি গ্যাস উৎপাদিত হচ্ছে, যেখানে প্রায় চার হাজপার এমএমসিএফডি চাহিদা মেটাতে বিদেশ থেকে প্রায় সাত শ’ এমএমসিএফডি গ্যাস আমদানি করা হচ্ছে, বাকি প্রায় এক হাজার এমএমসিএফডি ঘাটতি থেকে যাচ্ছে।
সূত্র : ইউএনবি