বুধবার, ০২:০০ অপরাহ্ন, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।

ইন্ডিয়া টুডেতে গুমের ফরমায়েশি রিপোর্ট

আবুল কালাম মানিক
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ১৫ অক্টোবর, ২০২২
  • ১২১ বার পঠিত

বাংলাদেশে জাতিসঙ্ঘের ৭৬টি বিবেচ্য গুমের তালিকার দোষত্রুটি নিয়ে সম্প্রতি এক ফরমায়েশি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতীয় ইংরেজি দৈনিক দ্য ইন্ডিয়া টুডে। সেই ফরমায়েশে ভালোভাবে সাড়া জানিয়েছেন দেশের প্রথিতযশা মানবাধিকারকর্মী ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা সুলতানা কামাল। এ জন্য তিনি একটি একান্ত সাক্ষাৎকারও দিয়েছেন। প্রতিবেদকের সুরে তাল মিলিয়ে গুম-খুন ও মানবাধিকার প্রশ্নে বিএনপি-জামায়াতের নিন্দা এবং আওয়ামী লীগের প্রশংসা করেছেন। পত্রিকাটির মতলব জাহির হয়ে পড়লে এক লাফে দৃশ্যপট থেকে বেরিয়ে যাওয়ার কোশেশও করেছেন। সুলতানা কামালের মন্তব্যে তোলপাড় সৃষ্টি হলে ইন্ডিয়া টুডে তার সাক্ষাৎকারের স্ক্রিপ্ট বা লিপি প্রকাশ করে দেয়। তিনি এখন নিজস্ব মতামতের দায় অস্বীকার করে প্রতিবেদক শাহিদুল হাসান খোকনকে দোষারোপ করছেন। তিনি ইন্ডিয়া টুডে সাংবাদিকের পেশাগত সততা ও উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

একান্ত সাক্ষাৎকারে প্রশ্নের ধরন ও উত্তরের মধ্যেই প্রশ্নকর্তা ও উত্তরদাতার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য প্রকাশ হয়ে পড়ে। সুলতানা কামাল প্রসঙ্গের বাইরে গিয়েই বিএনপির সমালোচনা ও বিচার দাবি করেছেন। যেসব দেশীয় মানবাধিকার সংস্থার তথ্যের ভিত্তিতে গুমের তালিকা তৈরি হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে সেসব সংগঠনের নিন্দা জানিয়েছেন। এমনকি তিনি প্রশ্নের আওতার বাইরে গিয়ে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এবং অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালেরও নিন্দা করেছেন বাংলাদেশে ১৯৭১ সালের যুদ্ধাপরাধের বিচারের ব্যাপারে তাদের ভূমিকার জন্য। এটা আশ্চর্যের বিষয় যে, প্রশ্নকর্তা ও উত্তরদাতা উভয়েই তাদের বিএনপি-জামায়াত বিদ্বেষ প্রকাশ করেছেন অবলীলায়।

পত্রিকাটি জাতিসঙ্ঘের বিশেষজ্ঞ কমিটি ওয়ার্কিং গ্রুপ অন এনফোর্সড অর ইনভলান্টারি ডিসঅ্যাপিয়ারেন্সেস প্রণীত গুমের বিবেচ্য তালিকাটিকে নিম্নমানের, অগোছালো ও বিতর্কিত একটি কাজ হিসাবে চিত্রিত করতে বিগত ২ অক্টোবর একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনের শিরোনাম দেয়া হয় : ‘বিচারের নামে প্রহসন: বাংলাদেশে গুম নিয়ে জাতিসঙ্ঘের প্রতিবেদনে ত্রুটির সমালোচনা করেছেন বিশেষজ্ঞরা’। সংবাদের শিরোনাম এবং প্রতিবেদকের প্রশ্নের ধরন থেকেই পত্রিকাটির বিশেষ মতলবের আভাস পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটিকে বৈধতা দেয়ার মানসে মোট তিনজন বাংলাদেশী বিশেষজ্ঞের মতামত জুড়ে দেয়া হয়। সুলতানা কামালের নেয়া হয় একান্ত সাক্ষাৎকার। বাকি দু’জনের মধ্যে প্রফেসর ইমতিয়াজ আহমেদ উল্লেখযোগ্য। এরা সবাই বর্তমান ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সমর্থক এবং বিএনপি-জামায়াতের ঘোর বিরোধী। ইন্ডিয়া টুডের দাবি, জাতিসঙ্ঘের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বাংলাদেশের গুমের শিকার ব্যক্তিদের নিয়ে করা তালিকা ভুলে ভরা। সুলতানা কামাল প্রতিবেদককে বলেছেন, গুম নিয়ে ভুয়া তথ্য দেয়ার ইতিহাস রয়েছে বিএনপির। তিনি বিএনপির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান।

শুধু সরকারপক্ষীয় বিশেষজ্ঞের মতামতের ভিত্তিতে জাতিসঙ্ঘের তালিকার অসারতা প্রমাণ করতে গিয়ে ভারতীয় পত্রিকাটি সাংবাদিকতার স্বীকৃত নীতিমালার ন্যক্কারজনক ব্যত্যয় ঘটিয়েছে। গুম নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় সঙ্কট, একবারেই দলীয় বিষয় নয়। কিন্তু ইন্ডিয়া টুডে জাতিসঙ্ঘের গুমের তালিকা সম্পূর্ণ ভ্রান্ত প্রমাণের মানসে বাংলাদেশের বিবদমান রাজনৈতিক দলগুলোর অতীতের সহিংস কর্মকাণ্ডের দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছে। অপ্রাসঙ্গিক বিষয়াবলির অবতারণা করে পত্রিকাটি গুমসঙ্কটের ন্যায়সঙ্গত সমাধানের পথ রুদ্ধ করে ভিন্ন কোন লক্ষ্য হাসিল করতে চায় কিনা এমন প্রশ্নের উদ্রেক ঘটেছে অনেকের মধ্যেই। এটা হয়েছে প্রতিবেদনে অযাচিতভাবেই বিরোধী দলগুলো বিশেষ করে বিএনপি-জামায়াতের ঘাড়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বেশির ভাগ দায় চাপিয়ে দেয়ার কারণে। পর্যাপ্ত তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন ছাড়া এ ধরনের একতরফা অন্যায় দোষারোপ পক্ষপাতদুষ্ট সাংবাদিকতার নিকৃষ্ট নজির বলে বিবেচিত হতে বাধ্য।

বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক মহল ও সুশীলসমাজে তোলপাড় সৃষ্টি হলে ৬ অক্টোবর সুলতানা কামাল এক প্রতিবাদলিপিতে দাবি করেন যে, সাক্ষাৎকারে তার বক্তব্য বিকৃত করা হয়েছে এবং প্রসঙ্গের বাইরে তাকে উদ্ধৃত করা হয়েছে। তিনি আরো বলেছেন, ‘প্রতিবেদক যেভাবে প্রশ্ন করেছেন, তাতে আমার মনে হয়েছে তিনি গুম নিয়ে একটি সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন এবং তার এই সিদ্ধান্তকে বৈধতা দেওয়ার জন্যই বিশ্লেষকদের বক্তব্য জুড়ে দেয়া হয়েছে।’ প্রতিবেদকের প্রশ্নের মধ্যে মতলব লুকিয়ে থাকার পরও তিনি কেন আগবাড়িয়ে প্রলুব্ধ হয়েছিলেন এটাই আশ্চর্য। কেননা সুলতানা কামাল শুধু একজন প্রতিষ্ঠিত মানবাধিকারকর্মীই নন, তার রয়েছে ভিন্ন মত কিংবা ‘অন্যায়ের’ বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জ্ঞাপনের উজ্জ্বল ইতিহাস। তিনি ‘অন্যায়ের’ প্রতিবাদ জানিয়ে ২০০৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগ করেছিলেন। ওই পদত্যাগ ওয়ান-ইলেভেন পটপরিবর্তনের প্রেক্ষাপট সৃষ্টি করে আওয়ামী লীগের ক্ষমতারোহণের পথ সুগম করে।

সুলতানা কামাল ভারতীয় পত্রিকাটির নৈতিকতা ও পেশাগত সততার বিষয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদন পুরোপুরি আমলে নিয়েছেন। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য সফর শেষে গণভবনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনা বলেন, ‘কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংস্থা সুর তুলল গুম-খুন, গুম খুন। গুমের হিসাব যখন বেরোতে শুরু করল তখন দেখা গেল, সব থেকে বেশি গুম জিয়াউর রহমানের আমলেই শুরু হয়েছে। তারপর থেকে তো চলছেই। তারপর আমরা যখন তালিকা চাইলাম, ৭৬ জনের তালিকা পাওয়া গেল। ৭৬ জনের তালিকার মধ্যে কী পাওয়া গেল, আপনারই ভালো জানেন। ভারতের কিছু পলাতক আসামি, তাদের নামও সেই তালিকায়। এটা কেমন করে হয়।’

প্রতিবেদক বিশেষজ্ঞদের কাছে প্রশ্ন উত্থাপন করতে গিয়ে তার বিবেচনায় বাংলাদেশে বিগত সাড়ে চার দশকের মানবাধিকার লঙ্ঘনের একটি ফিরিস্তি তুলে ধরেছেন। তিনি তুলে ধরেছেন বাংলাদেশের রক্তাক্ত রাজনৈতিক ইতিহাস। বিএনপির তরফে উত্থাপিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ভুয়া দাবি। একইভাবে তাদের নজরে এনেছেন ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ সালে জাতির জনকের নির্মম হত্যাকাণ্ড, প্রেসিডেন্ট জিয়ার আমলে সঙ্ঘটিত ১৯টি সামরিক অভ্যুত্থান-পাল্টা অভ্যুত্থান, এরশাদ-খালেদার আমলে মানবাধিকারের বিপর্যয়। শেখ হাসিনার শাসনামলে বিএনপি-জামায়াতের সহিংসতা। তবে তার ভাণ্ডারে আওয়ামী লীগের সহিংসতার কোনো তথ্য বা ঘটনা না থাকায় সঙ্গত কারণেই তা উল্লেখ করেননি। বিএনপি সরকার কিংবা বিরোধী দল উভয় অবস্থায়ই মানবাধিকার লঙ্ঘন ও গুম-খুন করেছে কিন্তু আওয়ামী লীগ তা করেনি।

প্রতিবেদনে তিনি দাবি করেন যে, বাংলাদেশের সেনাবাহিনী ২০০৯ সালের পর থেকেই মানবাধিকার রক্ষায় সচেষ্ট হয়েছে। আর এটা সম্ভব শেখ হাসিনা সরকারের জন্যই। শেখ হাসিনা সেনাবাহিনীকে মৌলবাদের প্রভাবমুক্ত করেছেন। অর্থাৎ সব বিষয়ে রয়েছে প্রতিবেদকের পূর্বসিদ্ধান্ত। তা ছাড়া, তিনি তালিকায় দুই ভারতীয় নাগরিকের বাংলাদেশে গুম হবার ঘটনার সত্যতা ও যৌক্তিকতাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ আমলে বাংলাদেশ থেকে অন্তর্ধান হয়ে যাওয়া দুই নাগরিক যাদের অনেক দিন পর ভারতের জেলে সন্ধান মিলেছে সে বিষয়টি সচেতনভাবে চেপে গেছেন। দুই বাংলাদেশীর একজন সরকারের সাবেক প্রতিমন্ত্রী, অন্যজন যুদ্ধাপরাধ মামলার আসামি পক্ষের সাক্ষী।

ইন্ডিয়া টুডেকে দেয়া সুলতানা কামালের সাক্ষাৎকার কেন্দ্র করে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সাম্প্রতিক এক বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন ২২ বিশিষ্ট নাগরিক। এরা সবাই আওয়ামী লীগ সমর্থক। এক বিবৃতিতে তারা বলেন, রিজভী আক্রমণাত্মক, অসংবেদনশীল, অশোভন ও কুরুচিপূর্ণ ভাষায় সুলতানা কামালের সমালোচনা করেছেন। এর আগে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সম্প্রতি এক সমাবেশে বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা সুলতানা কামাল ও তার সাথে যারা আছেন তারা মানবাধিকারকর্মী নন, আওয়ামী অধিকার রক্ষার কর্মী। ইন্ডিয়া টুডেতে সুলতানা কামালের সাক্ষাৎকারের সমালোচনা করতে গিয়ে রিজভী ওই মন্তব্য করেন।

বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি বর্তমানে বহুল আলোচিত একটি আন্তর্জাতিক ইস্যু যার কেন্দ্রবিন্দুতে গুম। জাতিসঙ্ঘের বিশেষজ্ঞ কমিটি ওয়ার্কিং গ্রুপ অন ফোর্সড অর ইনভলান্টারি ডিসঅ্যাপিয়ারেন্সেস দীর্ঘ দিন ধরে বাংলাদেশে ৭৬টি বিবেচ্য গুমের স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করে আসছে। দেশের কল্যাণ ও বৃহত্তর স্বার্থেই এ অভিযোগের আশু নিষ্পত্তি প্রয়োজন। এরই মধ্যে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও গুমের অভিযোগে বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী র‌্যাবের ওপর আরোপিত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা।

বিশেষজ্ঞদের মতে, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর দাবি ও প্রতিবাদ উপেক্ষা করে মানবাধিকারের নীতি অব্যাহতভাবে লঙ্ঘনের কারণেই নেমে এসেছে মর্যদাহানিকর এ নিষেধাজ্ঞা। তবে বাংলাদেশের জরুরি সঙ্কট গুমকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের একটি মোক্ষম প্রেক্ষাপট রচনা করেছে ভারতের ইংরেজি দৈনিক দ্য ইন্ডিয়া টুডে।

জাতিসঙ্ঘ বিশেষজ্ঞ কমিটির বাইরে গুমের বিভিন্ন পরিসংখ্যান রয়েছে। দেশীয় মানবাধিকার সংগঠনগুলো গত এক দশকে ছয় শতাধিক গুমের ঘটনা রেকর্ড করেছে গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে। হংকংভিত্তিক এশিয়ান হিউম্যান রাইটস কমিশন গত ৮ অক্টোবর একটি তালিকা প্রকাশ করে। এতে ২০০৯ থেকে ২০২২ পর্যন্ত ৬২৩ জনের গুমের কথা বলা হয়েছে। তাদের হিসাবে এখনো সন্ধান মেলেনি ১৫৩ জনের এবং জীবিত আছেন ৩৮৩ জন, যাদের কেউ বাড়ি ফিরেছেন, বাকিরা আছেন জেলে। গুম হওয়ার পর ৮৪ জনের লাশ পাওয়া গেছে। বাকি তিনজনের হালনাগাদ তথ্য নেই।

গুম নিয়ে সৃষ্ট বিতর্ক নিরসনে জাতিসঙ্ঘের প্রস্তাব মোতাবেক একটি স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও সবার কাছে গ্রহণযোগ্য তদন্ত ছাড়া কোনো গত্যন্তর নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত অনুষ্ঠানের ঘোষণাই গুম বিষয়ে সব বিতর্ক নিরসনের জন্য যথেষ্ট। কিন্তু মানবাধিকার আন্দোলনের ‘চ্যাম্পিয়ন’ সুলতানা কামালরা একযোগে সবাই প্রধানমন্ত্রীর কাছে আজও এমন দাবি উত্থাপন করেননি। তাদের সবাই ইন্ডিয়া টুডের মতো উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপিয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারে ব্যস্ত।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com