চলমান ইউক্রেন যুদ্ধে উত্তর কোরিয়ার প্রায় ১০০০ সেনা নিহত হয়েছেন। এমনটাই জানিয়েছেন পশ্চিমা কর্মকর্তারা। রাশিয়ার সীমান্তবর্তী কুরস্ক অঞ্চলে ইউক্রেনীয় সেনাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে তারা নিহত হন।
উল্লেখ্য, কোরিয়ান সৈন্যদেরকে ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়াকে সহায়তা করতে সে দেশে পাঠানো হয়েছিল।
গতকাল বুধবার রাতে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে ।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরু করে। এরপর রুশ বাহিনীকে শক্তিশালী করতে পিয়ংইয়ং হাজার হাজার উত্তর কোরিয়ান সৈন্যকে রাশিয়াতে পাঠিয়েছে।
এদিকে কুরস্ক সীমান্তেও উত্তর কোরিয়ার যেসব সৈন্য মোতায়েন করা হয়েছে, সেখানেই এই প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।
এ প্রসঙ্গে নাম প্রকাশ না করার শর্তে পশ্চিমা কর্মকর্তারা বিবিসিকে বলেছেন, ‘মাত্র তিন মাসে রাশিয়ার পশ্চিমাঞ্চলীয় কুরস্ক অঞ্চলে লড়াইয়ে উত্তর কোরিয়ার সেনারা ইতোমধ্যেই প্রায় ৪০ শতাংশ হতাহতের শিকার হয়েছেন। উত্তর কোরিয়া থেকে পাঠানো আনুমানিক ১১ হাজার সৈন্যের মধ্যে ইতোমধ্যেই ৪ হাজার সৈন্য যুদ্ধে নিহত, আহত, নিখোঁজ বা প্রতিপক্ষের হাতে বন্দি হয়েছেন।’
কর্মকর্তারা আরও বলেছেন, ‘এই চার হাজার জনের মধ্যে প্রায় ১ হাজার জনই জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে নিহত হয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। অপরদিকে আহতদের কোথায় চিকিৎসা করা হচ্ছে, এমনকি কখন এবং কত সংখ্যক সৈন্য প্রতিস্থাপন করা হবে তাও এখনও স্পষ্ট নয়।’
এদিকে দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের গোয়েন্দাদের তথ্যমতে, আনুমানিক ১১ হাজার উত্তর কোরীয় সেনাকে রাশিয়ায় পাঠানো হয়েছে। তাদের বেশিরভাগই কুরস্ক সীমান্ত অঞ্চলে ইউক্রেনীয় সেনাদের বিরুদ্ধে লড়তে মোতায়েন করা হয়েছে।
মূলত গত বছরের আগস্টে ইউক্রেনীয় সেনারা হঠাৎ কুরস্কে ঢুকে লড়াই শুরুর পর অঞ্চলটির আংশিক নিয়ন্ত্রণ এখনো কিয়েভের এই সেনাদের হাতেই রয়েছে।
এ বিষয়ে বিশ্লেষকরা বলছেন, ‘উত্তর কোরিয়ার সেনারা যুদ্ধের অভিজ্ঞতার অভাব এবং ভাষাগত সমস্যার মতো চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে।’
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা চালালে উত্তর কোরিয়া এবং রাশিয়ার মধ্যে সামরিক সখ্যতা গড়ে উঠে। গত বছরের জুনে ঐতিহাসিক চুক্তিতে স্বাক্ষর করে উত্তর কোরিয়া এবং রাশিয়া, যা গত বছরের ডিসেম্বরে কার্যকর হয়।