আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতায় থাকার মতো কোনো পরিবেশ ও পরিস্থিতি নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। আজ সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ঢাকা জেলা বিএনপির উদ্যোগে ‘দ্রব্যমূল্যের সীমাহীন ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে’ আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি এ কথা বলেন।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘সরকারের পাপের বোঝা অনেক ভারী হয়ে গেছে। আমার মনে হয়, সরকার যতই ছলচাতুরী করুক, তাদের চলে যাওয়া সময় হয়ে গেছে। এখন আপনারা (দলীয় নেতাকর্মী) যদি চান, রাখতে পারেন। আর আপনারা যদি তাদের বিদায় চান, তাহলে মানববন্ধন ও রাজপথ দখল করে বলতে হবে- শেখ হাসিনাকে যেতে হবে।’
নেতাকর্মীদেরকে উদ্দেশ্যে গয়েশ্বর চন্দ্র বলেন, ‘আপনারা নিজেদের ভালো-মন্দ বিচার ও বিবেচনা করে যদি কর্মসূচির প্রতিবাদের ভাষা শক্ত না করে দুর্বল করেন তাহলে শেখ হাসিনা থাকতে পারবেন। তবে আজকে শেখ হাসিনার ক্ষমতায় থাকার মতো কোনো পরিবেশ ও পরিস্থিতি নাই। সেই কারণে বলব, আপনারাই শেখ হাসিনাকে বিতাড়িত, গণতন্ত্র উদ্ধার এবং খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে পারেন।’
বাংলাদেশে কোনো ধর্মের লোকই নিরাপদ না মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘মুসলমানরা নিরাপদ না, হিন্দুরা নিরাপদ না এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীও নিরাপদ না। যে দেশে গণতন্ত্র থাকে না, সে দেশে মানুষ নিরাপদ থাকে না। তবে দুর্নীতিবাজ ও ঘুষখোরেরা নিরাপদে আছে এবং যারা টেলিভিশনে গিয়ে মিথ্যা কথা বলেন তারা নিরাপদে আছেন।’
ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি দেওয়ান মো. সালাউদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আবু আশফাকের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, নির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুন রায় চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য দেন।
মানববন্ধনে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আওয়ামী লীগ পরমতসহিষ্ণু রাজনীতি করে বলেই অন্যরা রাজনীতি করতে পারছে। আওয়ামী লীগ সহিষ্ণু না অসহিষ্ণু এটাই তো একটা নাৎসিবাদী, ফ্যাসিবাদী ও গণবিরোধী কথা।’
তিনি বলেন, ‘নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম প্রতিনিয়ত বাড়ছে। এখন বাড়াবে ডিজেলের দাম। এগুলোর দাম বাড়লে আওয়ামী লীগের কিছু যায় আসে না। কারণ তারা জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন। তাদেরকে জনগণের দরকার নেই। এই কারণে একের পর এক দ্রব্যমূল্যে বাড়াচ্ছে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বায়ু দূষণের শহর হলো ঢাকা। পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো বলছে, কয়লা পুড়িয়ে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র করা ঠিক হবে না। পার্শ্ববর্তী যে দেশ থেকে কয়লা আমদানি করা হচ্ছে সে দেশে কয়লা পুড়িয়ে বিদ্যুৎ কেন্দ্র করে নাই। কিন্তু আমার দেশে করা হচ্ছে। যে প্রধানমন্ত্রী সুন্দরবন উজাড় করে বিদ্যুৎ কেন্দ্র করে সেই প্রধানমন্ত্রী গ্লাসগোতে পরিবেশ বিষয়ক সম্মেলনে গিয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে রিজভী বলেন, ‘মিনি বন্দরে ভারত চাল বন্ধ করে দিয়েছে। আপনাদের সঙ্গে এত খাতির, এত প্রেম তারপরও কেন চাল বন্ধ করে দিয়েছে? এ প্রশ্নের উত্তর প্রধানমন্ত্রী ও কাদের সাহেব বা অন্য কোনো মন্ত্রী দিতে পারবেন? এখনতো বর্ডার খোলা থাকার কথা, ট্রাকে ট্রাকে চাল আসার কথা। কিন্তু চালের ট্রাক আর ঢুকছে না, এর জবাব আপনি দিতে পারবেন না।’