জাতিসংঘ অধিবেশনে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্র সফরে থাকা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৪ অক্টোবর দেশে ফিরবেন। তার দেশে ফেরার অপেক্ষায় রয়েছে কতকগুলো দলীয় সিদ্ধান্ত। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অভ্যন্তরীণ কোন্দলকে কেন্দ্র করে দলে শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডে অভিযুক্ত নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা, দলের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর সম্মেলনের দিনতারিখ দেবেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ড ও স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সভা এবং দলের পরবর্তী কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকের ক্ষণ নির্ধারণ ও তৃণমূল নেতৃবৃন্দের সঙ্গে দলের সভাপতির সরাসরি বৈঠকের ক্ষণের বিষয়সহ দলের অভ্যন্তরীণ নানা বিষয়ে বেশ কিছু নতুন সিদ্ধান্ত আসবে বলে জানা গেছে। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটির মেয়াদ শেষ হচ্ছে।
এরও আগে দলের কার্যনির্বাহী কমিটি বৈঠক এবং ফরিদুপর-২ আসন উপনির্বাচনে প্রার্থী চূড়ান্ত করা ও কয়েকটি স্থানীয় সরকার নির্বাচনের জন্য প্রার্থী চূড়ান্ত করার জন্য দলের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ড ও সংসদীয় মনোনয়ন বোডের সভা হতে পারে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। দলের বেশ কয়েকজন নেতার ভাষ্য, সময় কম থাকায় মনোনয়ন বোর্ড ও কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক একদিনেও হতে পারে।
দলের কার্যনির্বাহী কমিটির অন্তত তিনজন নেতা আমাদের সময়কে বলেন, নেত্রী শেখ হাসিনা দেশের বাইরে যাওয়ার পর ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবীরসহ বিভিন্ন জেলা পর্যায়ের নেতা দলীয় শৃঙ্খলাবিরোধী কাজে লিপ্ত হয়ে অপ্রত্যাশিত আচরণ করেছেন। অন্যদিকে ইডেন কলেজে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে মারামারি, অতঃপর উভয় পক্ষের দায়িত্বহীন বক্তব্যসহ ছাত্রলীগের সার্বিক কর্মকাণ্ডেও দেশের বাইরে থেকে দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। ফলে অভিযুক্তদের বিষয়ে সিদ্ধান্তের পাশাপাশি ঢাকা মহানগর ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলন করার বিষয়ে নির্দেশনা আসতে পারে।
দলের আরেক নেতা আমাদের সময়কে বলেন, আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনগুলোর মধ্যে মৎস্যজীবী লীগ ও শ্রমিক লীগের নেতৃবৃন্দের কর্মকাণ্ডেও সন্তুষ্ট নন বঙ্গবন্ধুকন্যা। গ্রুপিং ও পদবাণিজ্যে জর্জরিত এই দুই সংগঠনের নেতৃবৃন্দকে হুশিয়ারি দেওয়ার পাশাপশি সম্মেলনের মধ্য দিয়ে নতুন নেতৃত্ব আনার তাগিদ থাকবে।
বিগত সময়ের মতো দলের কেন্দ্রীয় সম্মেলনের আগে সারাদেশের তৃণমূল নেতৃবৃন্দকে ডেকে সরাসরি কথা বলবেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। এটির দিনক্ষণও নেত্রী আসার পর ঠিক হবে বলে জানিয়েছেন দলের নেতৃবৃন্দ। চলতি মাস অক্টোবর অথবা নভেম্বর মাসের মধ্যেই বর্ধিত সভাটি হতে পারে বলে জানা গেছে।
জানতে চাইলে দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম আমাদের সময়কে বলেন, ‘আমাদের নেত্রী বর্তমানে দেশের বাইরে আছেন। তবে তিনি ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়েছেন। তিনি যেখানেই থাকুন না কেন, ডিজিটাল প্রক্রিয়ায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রোগ্রামে যোগ দেওয়ার পাশাপাশি সার্বক্ষণিক দল ও দেশের প্রতি নজর রাখছেন।’
নাছিম বলেন, মেয়াদ উত্তীর্ণ সব সংগঠনেরই সম্মেলন হবে। নেত্রী দেশে ফিরলে এক-একটা সংগঠনের জন্য দিনতারিখ ঠিক করা হবে। এসব সম্মেলনে যেহেতু তিনি নিজে উপস্থিত থাকেন, ফলে ভেবেচিন্তে সময় ও স্থান নির্ধারণ করতে হবে। তৃণমূলের নেতৃবৃন্দের সঙ্গেও ওনার সভা হবে; সব কিছুই হবে।