কওমি মাদরাসা নিয়ে তার বক্তব্য বিকৃত করা হয়েছে দাবি করে শিক্ষামন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেছেন, কওমী মাদরাসা বন্ধ সংক্রান্ত কোনো বক্তব্য তিনি দেননি। এ সময় তিনি বলেন, ‘কওমি মাদরাসা বাংলাদেশে আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে।’
মঙ্গলবার (৫ মার্চ) সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে কথা বলেন মন্ত্রী।
গত ৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া জেলা প্রশাসক সম্মেলনের প্রথম দিন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা এবং কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগ সম্পর্কিত কার্য অধিবেশন শেষে কওমি মাদরাসা নিয়ে কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী।
পরে সংবাদ মাধ্যমে খবর আসে যে শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, ‘নূরানী বা কওমি মাদরাসার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী কমে যাচ্ছে এবং সেগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘জেলা প্রশাসকদের থেকে একটি জেলা থেকে একটি আলোচনা এসেছিল যে অনিবন্ধিত নাম-পরিচয়হীন কিছু প্রতিষ্ঠান নূরানী মাদরাসা হিসেবে গড়ে উঠছে। সেগুলো নিবন্ধনের প্রক্রিয়া কী। সেই পরিপ্রেক্ষিতে আমি মন্তব্য করেছিলাম যে, যেসব নূরানী মাদরাসা গড়ে উঠছে সেগুলো কওমি মাদরাসার বোর্ড থেকে নিবন্ধিত হয়ে থাকলে তাদের সাথে কাজ করে, যথাযথ নিবন্ধন তাদের কাছে আছে কি না, সেগুলোতে কীভাবে শিক্ষাক্রম পরিচালিত হচ্ছে, সেটা কীভাবে আমাদের অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সাথে সাংঘর্ষিক না হয় সে ধরনের বিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবো, কীভাবে সেটা ইউনিফরমিটির মধ্যে আনা যায়।’
‘কিন্তু সোমবার একটি রাজনৈতিক দল এবং রাজনৈতিক নামধারী কিছু সংগঠন থেকে বলা হয়েছে, আমি বলেছি যে নূরানী বা কওমি মাদরাসার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী কমে যাচ্ছে এবং সেগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমি পরিষ্কার করে বলছি যে এ আলোচনা এসেছে জেলা প্রশাসকদের কাছ থেকে যে অনিবন্ধিত অনেক প্রতিষ্ঠান চলছে, সেগুলোর নিয়ন্ত্রক কারা। এ ধরনের মন্তব্য (কওমি মাদরাসা বন্ধ) আমি করিনি। যারা এ আলোচনা সৃষ্টি করে একটা গুজব রটাচ্ছে, অপপ্রচার। আমার বক্তব্য ভিডিওসহ আছে। গুজব রটিয়ে কওমি মাদরাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে এক ধরনের উত্তেজনা সৃষ্টির অপচেষ্টা করছে।’
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘তারা এ অপরাজনীতি প্রাক্কালে আরো অনেক ধরনের মানহানিকর এবং আপত্তিকর কথা বলছে। এরমধ্যে একটি ছিল যে আমি ইসকন নামের একটি সংগঠনের সদস্য এবং ইসকনের সদস্য হয়ে আমি ভিন্ন সংস্কৃতি শিক্ষাক্রমে ঢোকানোর অপচেষ্টায় লিপ্ত আছি। আমার বক্তব্য হচ্ছে, এটা একেবারে আপত্তিকর, মানহানিকর এবং ষড়যন্ত্রমূলক।’
তিনি বলেন, ‘আমি ইসকনের সদস্য না। আমি একজন অসাম্প্রদায়িদক মানুষ হিসেবে আমার বাবা বিভিন্ন ধর্মালম্বীদের তীর্থ কেন্দ্রে, পর্যটন কেন্দ্রে পর্যটক হিসেবে নিয়ে গিয়েছিলেন। ইসকনের একটি অনুষ্ঠানে যাওয়া মানে এই নয় যে আমি ইসকনের সদস্য। ইসকনের সদস্য হিসেবে আমাকে প্রচার করা হচ্ছে, আমি এর প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বার বার বলছি যে কওমি মাদরাসা বাংলাদেশে আছে। অবশ্যই থাকবে। কারণ আমরা আইন দ্বারা কওমি মাদরাসা শিক্ষাকে স্বীকৃতি দিয়েছি। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা কওমি মাদরাসা শিক্ষা সর্বোচ্চ ডিগ্রি দাওরায়ে হাদিসকে মাস্টার্স স্বীকৃতি দিয়েছেন।’