বৃহস্পতিবার, ০৭:০৬ অপরাহ্ন, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।
শিরোনাম :
গৌরনদীতে সন্ত্রাস-মাদক বিরোধী র‌্যালি ও আলোচনা সভা সারাদেশে ২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তাদের কর্মবিরতি, মানববন্ধন হাসিনার দালালরা বিভিন্ন অপকর্মের ফাইল পুড়িয়ে দিয়েছে : সারজিস শেখ হাসিনাকে পুনর্বহালের ষড়যন্ত্র বিএনপি মেনে নেবে না : জয়নুল আবদিন বিডিআর হত্যাকাণ্ডে কোনো দেশের সম্পৃক্ততা পেলে দায়ী করা হবে-তদন্ত কমিশনের চেয়ারম্যান বিদ্যুৎহীন সচিবালয়, বন্ধ দাপ্তরিক কার্যক্রম সচিবালয়ে আগুনের ঘটনা তদন্তে ৭ সদস্যের কমিটি গঠন ময়মনসিংহে ডাম্পট্রাক-অটোরিকশার সংঘর্ষে একই পরিবারের নিহত ৪ পেঁয়াজের দাম কমছেই, খুশি ভোক্তারা প্রতিদিনই বন্ধ হচ্ছে অসংখ্য মিল-কারখানা, বেকারের আর্তনাদ

আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের ইন্দো-প্যাসিফিক রূপরেখা ঘোষণা

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৩
  • ৭০ বার পঠিত

বাংলাদেশ সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে তার ‘ইন্দো-প্যাসিফিক রূপরেখা’ ঘোষণা করেছে। রূপরেখায় বলা হয়েছে, বঙ্গোপসাগরের উপকূলবর্তী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে একটি আধুনিক, জ্ঞান-ভিত্তিক, উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার লক্ষ্য রাখে। এক্ষেত্রে দেশের ভিশন ২০৪১ বাস্তবায়নে ইন্দো-প্যাসিফিকের স্থিতিশীলতা এবং সমৃদ্ধিকে একটি ‘গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক’ হিসেবে বিবেচনা করে।

ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের বৈশ্বিক জিডিপিতে সামষ্টিক অংশ, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে অগ্রগণ্য অবস্থান, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় সামগ্রিক কার্যক্রম এবং প্রযুক্তি খাতে গতিশীল বিকাশ বাংলাদেশের দীর্ঘমেয়াদী টেকসই অর্থনীতি ও সমৃদ্ধি নিশ্চিতকল্পে একটি সুদূরপ্রসারী ভূমিকা পালন করতে পারে।

বাংলাদেশ তাই এই অঞ্চলের সংশ্লিষ্ট সকলের সমৃদ্ধির লক্ষ্যে একটি অবাধ, উন্মুক্ত, শান্তিপূর্ণ, নিরাপদ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ইন্দো-প্যাসিফিক-এর ধারণা বাস্তবায়নের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন ত্রিদেশীয় সফর নিয়ে গণমাধ্যমকে ব্রিফিংয়ের পাশাপাশি ইন্দো-প্যাসিফিক রূপরেখা ঘোষণার এ ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো: শাহরিয়ার আলম এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলী সাবরিন উপস্থিত ছিলেন।

মৌলিক নীতিমালাসমূহ :
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পররাষ্ট্র নীতির মূলমন্ত্র- ‘সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারও সাথে বৈরিতা নয়’।

বাংলাদেশ সংবিধান অনুসারে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের মূলনীতিসমূহ, যথা জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও সমতার প্রতি শ্রদ্ধা, রাজনৈতিক স্বাধীনতা, অন্যান্য রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করা, আন্তর্জাতিক বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধান এবং আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসঙ্ঘের সনদে বর্ণিত নীতিসমূহের প্রতি শ্রদ্ধা; এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে শক্তিপ্রয়োগ পরিহার এবং সাধারণ ও সম্পূর্ণ নিরস্ত্রীকরণের জন্য অবিরাম প্রয়াস অব্যাহত রাখা।

সমুদ্র আইন সংক্রান্ত জাতিসঙ্ঘ সনদ বা আনক্লস, ১৯৮২-সহ প্রযোজ্য জাতিসঙ্ঘ চুক্তিসমূহ এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক কনভেনশনসমূহ মেনে চলা।

টেকসই উন্নয়ন, আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা, মানবিক কার্যক্রম এবং মৌলিক অধিকার ও স্বাধীনতাসমূহ সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে গঠনমূলক আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা জোরদার করা।

অভিলক্ষ্য:
উপর্যুক্ত মৌলিক নীতিমালার আলোকে নিম্নে বর্ণিত অভিলক্ষ্যসমূহ বাংলাদেশের ইন্দো-প্যাসিফিক রূপরেখা এবং এ সংশ্লিষ্ট কার্যক্রমকে পরিচালিত করবে।

ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে সকলের জন্য শান্তি, সমৃদ্ধি, নিরাপত্তা এবং স্থিতিশীলতা বজায় রাখার লক্ষ্যে পারস্পরিক আস্থা ও সম্মান অক্ষুণ্ণ রাখা, অংশীদারিত্ব ও সহযোগিতার ক্ষেত্র সম্প্রসারণ এবং সংলাপ ও বোঝাপড়ার ওপর গুরুত্বারোপ করা।

ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের মেরিটাইম বিষয়ক সুরক্ষা ও নিরাপত্তার বিদ্যমান কাঠামোকে শক্তিশালীকরণ, যথা সমুদ্রে জরুরি পরিস্থিতিতে দ্রুত সাড়া দেয়া ও সার্চ এন্ড রেসকিউ কার্যক্রম পরিচালনা করা এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আনক্লস, ১৯৮২-সহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য আন্তর্জাতিক আইন ও কনভেনশন অনুসারে অবাধ সামুদ্রিক চলাচল ও কোনো দেশের ভূখণ্ড বা পানিসীমার উপর দিয়ে আন্তঃরাষ্ট্রীয় বিমান চলাচলের অধিকারের বিষয়ে পূর্ণ সমর্থন বজায় রাখা।

ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের সংশ্লিষ্ট সহযোগীদের সাথে একযোগে আন্তর্জাতিক নিরস্ত্রীকরণ, শান্তিরক্ষা, শান্তি বিনির্মাণ এবং সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রমে অর্থবহ ও আন্তর্জাতিক মূল্যবোধসম্পন্ন অবদান রাখা।

ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে আন্তঃদেশীয় সংগঠিত অপরাধসমূহ দমনে নীতি কাঠামো প্রণয়ন ও ব্যবহারিক পদক্ষেপের মাধ্যমে আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতার প্রয়াসকে সমর্থন করা।

জাতিসঙ্ঘে বাংলাদেশ প্রবর্তিত ‘শান্তির সংস্কৃতি’ এজেন্ডা বাস্তবায়নে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নেতৃস্থানীয় ভূমিকা সম্প্রসারণ, ‘নারী, শান্তি ও নিরাপত্তা’ এজেন্ডার ওপর অব্যাহত আন্তর্জাতিক অঙ্গীকার বজায় রাখা।

আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি রক্ষা করা এবং ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে শান্তিপূর্ণ, ন্যায়সঙ্গত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গঠনের জন্য কার্যক্রম অব্যাহত রাখা।

উন্মুক্ত, স্বচ্ছ ও নিয়ম-ভিত্তিক বহুপাক্ষিক ব্যবস্থাসমূহ সুসংহতকরণের মধ্য দিয়ে অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, উন্নয়নের অধিকার এবং সকলের সার্বিক সমৃদ্ধির মাধ্যমে ইন্দো-প্যাসিফিক এবং এর বাইরেও সুষম ও টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিতকরণে ভূমিকা রাখা।

ভৌত, প্রাতিষ্ঠানিক, জ্বালানি, ডিজিটাল এবং মনুষ্য পর্যায়ে সংযুক্তির প্রসার, নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতিতে পণ্য, পরিষেবা, পুঁজি এবং জনগণের চলাচল সহজতর করা এবং প্রযুক্তি হস্তান্তর, অভিগম্য উদ্ভাবন এবং উন্মুক্ত ও নিরাপদ সাইবারস্পেস ও মহাকাশ-এ দায়িত্বশীল আচরণ নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে কার্যক্রম অব্যাহত রাখা।

যেকোনো ভবিষ্যৎ সঙ্কট ও বিপর্যয়মূলক পরিস্থিতি সুষ্ঠুভাবে ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে নিরবচ্ছিন্ন ও অবাধ বাণিজ্য প্রবাহকে সুসংহত করতে টেকসই আঞ্চলিক এবং বৈশ্বিক যোগান শৃঙ্খল বা ভ্যালু চেইন তৈরির উদ্দেশে দেশীয় কৃষি, শিল্প এবং সেবা খাতসমূহের সদ্ব্যবহার নিশ্চিত করা।

টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট ১৪-সহ আন্তর্জাতিকভাবে সম্মত সংশ্লিষ্ট অন্যান্য উন্নয়ন অঙ্গীকারসমূহের আলোকে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে মহাসাগর, সাগর এবং সামুদ্রিক সম্পদের সংরক্ষণ, টেকসই ব্যবহার এবং ব্যবস্থাপনাকে সুসংহত করা।

ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে খাদ্য নিরাপত্তা, জল-সংহতি এবং দুর্যোগ ঝুঁকি প্রশমনে দেশীয় উত্তম চর্চাসমূহকে তুলে ধরাসহ সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করা।

জলবায়ু পরিবর্তন, জীববৈচিত্র্য হ্রাস, সামুদ্রিক দূষণ এবং পরিবেশের ওপর ক্ষতিকারক প্রভাবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক কনভেনশন ও অঙ্গীকারসমূহের সাথে সামঞ্জস্য রেখে ধারাবাহিকভাবে দৃশ্যমান কার্যক্রম গ্রহণ করা।

সকলের জন্য জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ ও প্রযুক্তি হস্তান্তরসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করা।

ভবিষ্যৎ অতিমারী মোকাবেলায় সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ এবং স্বাস্থ্য নিরাপত্তা জোরদারকরণের লক্ষ্যে ভ্যাকসিন, ডায়াগনস্টিক ও চিকিৎসা সুরক্ষা সামগ্রীর মতো ‘বৈশ্বিক সম্পদ’-এ সকলের অভিগম্যতা নিশ্চিত করাসহ প্রয়োজনীয় কার্যক্রম অব্যাহত রাখা।

আঞ্চলিক সহযোগিতার ক্ষেত্র সম্প্রসারণ এবং পারস্পরিক উপকারী পরিপূরকতা বাড়ানোর জন্য উপ-আঞ্চলিক অংশীদার এবং প্রাসঙ্গিক সংস্থাগুলো সাথে সহযোগিতা।

‘স্মার্ট বাংলাদেশ’-এর রূপকল্পকে সামনে রেখে সকলের ভাগাভাগি সুবিধার জন্য বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, গবেষণা ও উদ্ভাবনে সহযোগিতা ও সহযোগিতা জোরদার করা।
সূত্র : ইউএনবি

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com