শনিবার, ০৬:২২ পূর্বাহ্ন, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১লা অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।
শিরোনাম :
ফ্যাসিবাদের শেকড় অনেক দূর ছড়িয়ে আছে: আইন উপদেষ্টা দেশে চালু করা হচ্ছে স্যাটেলাইট ইন্টারনেট আন্তর্জাতিক ভূরাজনৈতিক সম্মেলন শনিবার, উদ্বোধনী ভাষণ দেবেন ড. ইউনূস আইসিটির চিফ প্রসিকিউটরকে নিয়ে নুরের বক্তব্য প্রত্যাহার ব্যাংকে তারল্য সংকট : টাকা উত্তোলনে ভোগান্তিতে ৬ ব্যাংকের গ্রাহক বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করল নেপাল গৌরনদীতে নিত্যপণ্যের বাজার দর নিয়ন্ত্রনে রাখতে বসানো হল ন্যায্য মূল্যের বাজার অপহরণের ৯ দিনেও খোজ মিলছেনা গৌরনদীর অপহৃতা কিশোরী নন্দিনি’র দেশ নায়ক তারেক রহমানের বিজ্ঞ নেতৃত্বের কারনে আমরা গনঅদ্ভুত্থানের মধ্যদিয়ে ফ্যাসিবাদের প্রধান নেত্রী শেখ হাসিনাকে দেশ থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছি-এম. জহির উদ্দিন স্বপন ভয়াবহ দূষণের কবলে দিল্লি, সকল প্রাইমারি স্কুল বন্ধ ঘোষণা

আটায়ও নাভিশ্বাস ক্রেতার

সময়ের কণ্ঠধ্বনি ডেস্ক:
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ৮ অক্টোবর, ২০২২
  • ৬৭ বার পঠিত

দেশের মানুষের প্রধান খাদ্যশস্য চাল। এরপরই রয়েছে আটা-ময়দা। বর্তমানে বাজারে চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই আটার ওপর নির্ভরতা বেড়েছে নিম্ন ও সীমিত আয়ের পরিবারগুলোর। কিন্তু আটার দামও এখন পাল্লা দিচ্ছে চালের সঙ্গে। বাজারে চাল ও আটার দাম এখন প্রায় সমান। বর্তমানে এক কেজি খোলা আটা কিনতে হচ্ছে ৫৫ টাকা দিয়ে। অথচ একই দামে এক কেজি চাল কেনা সম্ভব। অপরদিকে প্যাকেটজাত আটার দামও একই গতিতে বেড়েছে। চালের পর আটার দামের এমন উলম্ফনে দুশ্চিন্তার ভাঁজ পড়েছে খেটে খাওয়া মানুষের কপালে।

রাজধানীর হাতিরঝিল কাঁচাবাজারে খোলা আটার দাম জিজ্ঞেস করছিলেন দিনমজুর আয়নাল করিম। প্রতিকেজি ৫৫ টাকা শুনে আঁতকে ওঠেন তিনি। আক্ষেপ করে বলেন, ‘জিনিসপত্রের দাম আর কত বাড়বো? আর তো কুলাইতে পারি না। সেই দিনও তো আটার দাম বাড়লো। এর মধ্যে আবার বাড়ছে। গেল সপ্তাহে কিনছি ৫০ টাকা। এই কয়দিনে ৫৫ টাকা হইয়া গেল। বেশিদিন আগের কথা না, ৪২ টাকা কেজিও কিনছি। এহন তো দেখি চাল আর আটার দাম সমানে সমান। এমন চললে না খায়া মরতে হইবো আমগো।’ কথা শেষে আটা না কিনেই চলে যান আয়নাল।

কথা হয় বাজারের আরমান জেনারেল ভ্যারাইটিজ স্টোরের ব্যবসায়ী ইমাম হোসেনের সঙ্গে। তিনি জানান, দফায় দফায় বাড়তে থাকা আটার দাম অল্প কয়েকদিনের ব্যবধানে আবারও বেড়েছে। বর্তমানে খোলা আটার কেজি ৫৫ টাকায় বিক্রি করছেন তিনি। কিছুদিন আগে যা ৫০ থেকে ৫২ টাকায় বিক্রি করেছেন। মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে দাম বেড়ে প্রতিকেজি খোলা আটা ৫৫ টাকা আর প্যাকেট আটা ৬০ টাকা হয়েছে। এই দামে অনায়াসে এক কেজি চাল কেনা যাবে।
ইমাম হোসেন আরও বলেন, গত মাসের শেষদিকেও খোলা আটার বস্তা (৫০ কেজি) ২ হাজার ৪০০ টাকায় কিনেছেন তিনি। এখন ২ হাজার ৫৫০ টাকার নিচে বস্তা পাওয়া যাচ্ছে না। আট দিন আগে সোনারগাঁও ফ্লাওয়ার মিলের চাঁপাফুল আটার এক বস্তা কিনেছেন তিনি এ দামে। সেই আটা ৫৫ টাকা কেজি বিক্রি করছেন। এর কমে বিক্রি করা সম্ভব নয়।

একই কথা জানালেন মালিবাগ বাজারের ভূঁইয়া স্টোরের ব্যবসায়ী মো. শিপনও। তিনি বলেন, চার-পাঁচ দিনের ব্যবধানে আটার দাম আরেক দফা বেড়েছে। বসুন্ধরাসহ বিভিন্ন কোম্পানির বস্তা এখন তারা কিনছেন ২ হাজার ৫৫০ থেকে ২ হাজার ৬০০ টাকায়। কয়েকদিন আগেও যা ২ হাজার ৩৮০ টাকা থেকে ২ হাজার ৪০০ টাকার মধ্যে কেনা গেছে। বাজারে গমের দামও অনেক বেড়েছে, সংকটও রয়েছে। এক সপ্তাহ আগে তারা গমের অর্ডার দিয়ে এখন পর্যন্ত পাচ্ছেন না।

প্যাকেট আটার দামও একই গতিতে বেড়েছে বলে জানান মেসার্স বিপ্লব স্টোরের ব্যবসায়ী মো. সোলায়মান। তিনি বলেন, দাম বেড়ে আটার এক কেজির প্যাকেট এখন ৫৮ থেকে ৬০ টাকা এবং দুই কেজির প্যাকেট ১১৫ টাকা হয়েছে। আগে এক কেজির প্যাকেট ৫৫ টাকা এবং দুই কেজির প্যাকেট ১১০ টাকায় বিক্রি করেছি। কোম্পানিগুলো হুটহাট দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। আমাদেরকেও বাধ্য হয়ে সে অনুযায়ী দাম বাড়াতে হচ্ছে।

সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের গতকালের বাজার প্রতিবেদনেও আটার দাম বাড়ার চিত্র উঠে এসেছে। সংস্থাটির পর্যবেক্ষণ বলছে, গত এক মাসে খোলা আটার দাম ৮ শতাংশ এবং বছরের ব্যবধানে ৫৯.৭ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। একইভাবে বেড়েছে প্যাকেটজাত আটা ও ময়দার দামও।

কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, ‘ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের ফলে সরবরাহ সংকটের পাশাপাশি গমের দামও বেড়ে গিয়েছিল। সেখানে সরবরাহ সংকট হয়তো এখনো রয়েছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে গমের দাম কমতে শুরু করেছে। তাই দেশের বাজারে যেভাবে আটা-ময়দার দাম দফায় দফায় লাফিয়ে বাড়ছে, সেটা অস্বাভাবিক। এটা খতিয়ে দেখা দরকার। কারণ শুধু আটার ক্ষেত্রে নয়, প্রয়োজনীয় সব পণ্যের বেলাতেই আমরা দেখি সুযোগ বুঝে ব্যবসায়ীদের মধ্যে অতিরিক্ত মুনাফার প্রবণতা রয়েছে।’

চালের দাম বাড়লে অল্প আয়ের মানুষের আটার ওপর নির্ভরতা বাড়ে। সুতরাং এ ধরনের পণ্যের ক্ষেত্রে সরকারকে আলাদা নজর রাখতে হবে বলে মনে করেন গোলাম রহমান। ব্যবসাবান্ধব নীতির পাশাপাশি সরকারকে চাল, তেল, আটার মতো অতিপ্রয়োজনীয় পণ্যের ক্ষেত্রে ভোক্তার স্বার্থের দিকটাও প্রাধান্য দিতে আহ্বান জানান তিনি।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com