আরব সাগর পাড়ে এই লড়াই জয়-পরাজয় ছাপিয়ে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার লড়াই। যেই লড়াইয়ে জয় ছাড়া কোনো উপায় নেই, সুযোগ নেই হেরে যাওয়ার। হেরে গেলেই বিদায়, লজ্জায় মাথা নিচু করে ফিরতে হবে দেশে। বিপরীতে জয় পেলে উঠে যাবে এশিয়া কাপের সেমিফাইনালে। দুই দলের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য এখন একটাই। এমনকি দুই দলের বৈশিষ্ট্যও এখন একই।
দুই দলই পাড় করছে তাদের বাজে সময়। শেষ ১০ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে দুই দলের অবস্থাও প্রায় একই। শ্রীলঙ্কার জয় ২ ম্যাচে, বিপরীতে বাংলাদেশের জয় ৩ ম্যাচে। আবার দুই দলই আফগানিস্তানের সাথে প্রথম ম্যাচ হেরে এখন খাদের কিনারে। সামান্য পা পিছলে গেলেই অতল গহ্বরে। দুটো দলই আফগানিস্তানের সাথে হেরেছে খুবই বাজেভাবে। যার মাশুল হিসেবে আজ জীবন-মরণ সন্ধিক্ষণে।
যাহোক, দুই দল এখন পর্যন্ত মুখোমুখি হয়েছে ১২ টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে। যেখানে ৮ জয় লঙ্কান সিংহদের, বিপরীতে ৪ জয় আছে বাংলার বাঘদের। তবে শেষ ৩ দেখায় ২ জয়ে পাল্লা ভারী বাংলাদেশের, যদিও শেষ ম্যাচে জয় তাদের। শেষবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে মুখোমুখি হয়েছিল ২ দল। যেখানে বাংলাদেশ হেরে যায় ৫ উইকেটে। তবে এবার প্রতিশোধ নেয়ার সুযোগ এসেছে, পারবে কি বাংলাদেশ?
দুই দলের লড়াইয়ে ইনিংস প্রতি শ্রীলঙ্কার গড় রান ১৬৬, বিপরীতে বাংলাদেশের গড় রান ১৫৮। যেখানে আগে ব্যাট করে টাইগারদের গড় ১৬০, সেখানে লঙ্কানদের গড় ১৮২। আর পরে ব্যাট করা ম্যাচে বাংলাদেশের গড় ১৫৬, শ্রীলঙ্কার গড় ১৫০। ইনিংসে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ২১৫, শ্রীলঙ্কার ২১৪।
এবার ফিরি ব্যক্তিগত অর্জনে। দুই দলের লড়াইয়ে কোন যোদ্ধারা আছেন শীর্ষে। যাহোক, দুই দলের লড়াইয়ে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকার ওপরের তিন নামের দুটো বাংলাদেশের দুই ভাইরা-ভাইয়ের। মুশফিকের সংগ্রহে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৯৬ রান। ২৭১ রান নিয়ে তৃতীয় স্থানে মাহমুদউল্লাহ। শীর্ষে আছেন লঙ্কান কুশাল পেরেরা, তিনি করেছেন ৩৬৬ রান।
সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত স্কোর সাব্বির রহমানের। ৮০ রানের ইনিংস আছে তার দখলে। সমান ৮০ রানে অপরাজিত ইনিংস আছে লঙ্কান আসালাঙ্কার। ৭৭ ও ৭৪ রানের দুটো ইনিংস নিয়ে ৩ ও ৪ নাম্বার নাম কুশল পেরেরা। অপরাজিত ৭২ রান নিয়ে ৫ম স্থানে আছেন মুশফিকুর রহিম।
এশিয়া কাপ স্কোয়াডে আছেন, এমন ক্রিকেটারদের মাঝে সর্বোচ্চ স্ট্রাইকরেট রাজাপাকশের, ১৭১। দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে থাকা শানাকা ও আসালাঙ্কার স্ট্রাইকরেট যথাক্রমে ১৬৪ ও ১৬৩। বাংলাদেশের হয়ে যদিও সর্বোচ্চ স্ট্রাইকরেট লিটন দাসের, তবে আজ ম্যাচে খেলা মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহর স্ট্রাইকরেট সবার সেরা। মুশফিকের ১৫০ ও মাহমুদউল্লাহ লঙ্কানদের বিপক্ষে ব্যাট করেছেন ১৪৮ স্ট্রাইকরেটে। সর্বোচ্চ ব্যাটিং গড়ে সবার ওপরের নাম কাপুগেদারা ও নাইম শেখ। তাদের গড় সমান ৬২। তৃতীয় স্থানে থাকা রাজাপাকশের গড় ৫৩ ও চতুর্থ স্থানে থাকা মোসাদ্দেক সৈকতের গড় ৫১।
উইকেটের দৌড়ে ১২ উইকেট নিয়ে সবার ওপরে সাকিব আল হাসান। ১১ উইকেট নিয়ে দুই ও তিন নাম্বারে লাসিথ মালিঙ্গা ও মুস্তাফিজুর রহমান। চারে থাকা মাশরাফির উইকেট ৯টি। ৭ উইকেট নিয়ে পঞ্চম স্থানে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। সেরা বোলিং ফিগার মোস্তাফিজুর রহমানের ৪/২১। মালিঙ্গার আছে ২০ রানে ৩ উইকেট, ও সাকিবের সেরা ৩/২৪।
মিনিমাম ৫ ওভার বল করেছেন, এমন বোলারদের মাঝে সর্বনিম্ন ইকোনমি আরাফাত সানির, ৫.০০। তবে এশিয়া কাপে আছেন এমন ক্রিকেটারদের মাঝে সর্বনিম্ন ইকোনমি করুনারত্নের, ৪.০০। দ্বিতীয় স্থানে থাকা সাকিবের ইকোনমি ৬.২৮। দুই দলের লড়াইয়ে তৃতীয় সর্বোচ্চ ওভার বলও করেছেন বাংলাদেশের অধিনায়ক।