বুধবার, ০১:০৯ পূর্বাহ্ন, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।
শিরোনাম :
গৌরনদীতে যৌথ বাহিনীর অভিযানে মাদকসহ দুই বিক্রেতা গ্রেপ্তার প্রধান শিক্ষিকার বদলীর আদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে গৌরনদীতে বরিশাল-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ গৌরনদীতে ধর্ষনের পর শিশু কন্যাকে হত্যা ১০ দিন পর অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার সাংবাদিক সঞ্জয় কুমার পালের শ্বশুর অতুল চন্দ্র কুন্ডু’র পরলোক গমন আমাকে কিন্তু কোন বাহিনীর প্রধান বানাইয়েন না আপনারা-এম. জহির উদ্দিন স্বপন ‘তাড়াহুড়ার প্রয়োজন নেই, সংস্কার শেষ হলেই নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন’ সমন্বয়কের বাড়ির দেয়ালে ‘মৃত্যুর জন্য প্রস্তুতি নাও’ গণহত্যার সাথে জড়িতদের বিএনপিতে নেয়া হবে না : মির্জা ফখরুল ছাত্রদলের ঢাকা মহানগরের ৪ শাখার কমিটি অনুমোদন মেঘনায় জাহাজে নিহত সেই ৭ জনের পরিচয় মিলেছে

আজ  নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন

সময়ের কণ্ঠধ্বনি ডেস্ক:
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ১৩ নভেম্বর, ২০২৪
  • ১৯ বার পঠিত

ভালোবাসতেন দুঃখ পেতে

‘মৃত্যুর আগে পাখিরা মনের ভেতরে সাড়া পায়, তখন তারা দূর বনে চলে যায়। বনের গভীর থেকে গভীরে গিয়ে পাখিরা মৃত্যুকে ডাকে, আসো এইবার আমাকে নাও।’ কথাটি প্রায়ই বলতেন নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ। বেঁচে থাকলে আজ তিনি পা দিতেন ৭৬ বছরে হয়তো এখনও তিনি লিখতেন।

আজ  নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন

হুমায়ূন আহমেদের বই বেশি বিক্রি হয় কেন?

আমাদের আজকের আয়োজন তার জীবনের কথা, বিশ্বাস, পছন্দ, অপছন্দ, প্রিয়, অপ্রিয় বিষয় নিয়ে।

# হুমায়ূন আহমেদ মনে করতেন ‘নন্দিত নরকে’ তার এক্সপেরিমেন্টাল কাজ। তার লেখা পিওর উপন্যাস ‘জোছনা ও জননীর গল্প’।

# ম্যাট্রিক ও ইন্টারে বোর্ড স্ট্যান্ড করা ছাত্র হিসেবে তার কোনো গর্ব বা অহঙ্কার ছিল না। তিনি কখনো নামের পাশে ‘ডক্টর’ লিখতেন না। তবে ব্যক্তিগত জীবনে হুমায়ূন আহমেদ নিজের সততা ও নিজের লেখার ক্ষমতা নিয়ে প্রচ- অহঙ্কারী ছিলেন।

# শীত-গ্রীষ্ম সারা বছর তিনি গরম পানিতে গোসল করতেন।

# হুমায়ূন আহমেদের প্রকাশকরা হিসাব করে বের করেছেন, ‘হুমায়ূন আহমেদের প্রকাশিত এক একটা শব্দের বিক্রয়মূল্য পাঁচ হাজার পাঁচশ টাকা’।

# কম্পোজ হওয়ার পর প্রতিটা পা-ুলিপি তিনি নিজ হাতে কুচি কুচি করে ছিঁড়ে ফেলতেন।

# তার বাসায় কোনো লকার ছিল না। কোনো তালা-চাবি ছিল না। উনি বাসা কোনোদিন লক করে ঘুমাননি।

# ভূতে বিশ্বাস করতেন। অভিনেতা সালেহ আহমেদকে তিনি বলেছিলেন, এই জগতে যেমন শরীরসর্বস্ব প্রাণী আছে, তেমনি অশরীরী প্রাণীও আছে। শরীরওয়ালা প্রাণীরা দিনের বেলায় কাজ করে, অশরীরী প্রাণীরা রাতের বেলায় কাজ করে।

# হুমায়ূন আহমেদ একা একা কাঁদতেন। আবেগপ্রবণ কোনো লেখা লিখতে গেলে তার চোখ ভিজে উঠত। কোনো মানুষের করুণ পরিণতি তার চোখে জল আনত।

# একবার এক বিখ্যাত সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদকে নিয়ে যাচ্ছেতাই কটূক্তি করলেন। এতে অনেকেই তাকে ফুঁসলে তুলতে চেষ্টা করল প্রতিবাদ করার জন্য। কিন্তু তিনি কিছুই বললেন না। এর কিছুদিন পর নুহাশ চলচ্চিত্রের এক অনুষ্ঠানে সেই সাহিত্যিককে তিনি অতিথি করলেন। তাকে খুব সম্মান করলেন এবং একটি খাম দিলেন। এতে ওই কটূক্তিকারক সাহিত্যিক সবার সামনে হুমায়ূন আহমেদের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে বক্তৃতা করলেন।

# তিনি নগরে বাস করতেন, কিন্তু পছন্দ করতেন গ্রামীণ জীবন।

# ঘরসংসার পছন্দ করতেন, তবে সংসারী হতে চাইতেন না।

# সাধারণ বাড়িঘর তাকে স্বস্তি দিত, কিন্তু বাস করতেন বহুতল ভবনে।

# অতি সাধারণ জীবনযাপনে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতেন, তবে অর্থ উপার্জনে ছিলেন মরিয়া।

# সহজ করে সরল বাক্যে লিখতে পছন্দ করতেন, কিন্তু নিজের জন্য পছন্দ করতেন উন্নত ক্ল্যাসিক সাহিত্য।

# সুখী হতে চেষ্টা করতেন, তবে ভালোবাসতেন দুঃখ পেতে।

# হইচই-আড্ডাবাজি ভালোবাসলেও পছন্দ করতেন নির্জনতা।

# হিমু চরিত্র পছন্দ করতেন, কিন্তু কেউ হিমুর মতো হোক, এটা তিনি চাইতেন না।

# জীবন নিয়ে নানা ধরনের এক্সপেরিমেন্ট পছন্দ করতেন, কিন্তু জীবন নিয়ে তার কোনো আগ্রহ ছিল না।

# নুহাশপল্লীর জন্য বেশ কয়েকটি জায়গা দেখেছিলেন তিনি। তবে হুমায়ূন আহমেদ একটিও পছন্দ করলেন না। বর্তমানে যেখানে নুহাশপল্লী, তাকে এই জায়গাটা দেখিয়েছিলেন ডা. এজাজ। পছন্দ করার কারণ সেখানে ছিল তিনটি লিচুগাছ। একটি গাছের গোড়ায় ছোট্ট উইঢিবি। তিনি বলেছিলেন, বাহ্! এমন জায়গায় মরেও শান্তি, আমি এই জায়গাটাই কিনব। তার পর জায়গাটা কেনা হলো। শণ-কাঠের বাংলো বানানো হলো। সেই লিচুগাছে দোলনা বেঁধে তিনি দুলতেন। হুমায়ূন আহমেদ নুহাশপল্লীতে যখন গিয়েছেন সব সময় ওই লিচুতলাতেই বসতেন। কোনো কোনোদিন অঝোর ধারায় বৃষ্টি ঝরত, তিনি লিচুতলায় দাঁড়িয়ে ভিজতেন। কখনো রাতে ভুবনভাসানো জোছনা নামলে স্যার লিচুতলায় বসে চাঁদের দিকে তাকিয়ে থাকতেন। লিচুতলার মায়া তার আর ছাড়া হলো না। সেই লিচুতলাতেই এখন তার সমাধি।

জনপ্রিয় ১০ ধারাবাহিক

হুমায়ূন আহমেদ নাট্যাঙ্গনে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়েছিলেন। তার নাটক থাকত দর্শকদের আগ্রহের শীর্ষে। তার লেখা চরিত্রগুলো হয়ে উঠেছিল জীবন্ত। এক সময় তিনি নিজেও যুক্ত হন নির্মাণের সঙ্গে। একক নাটক ও টেলিফিল্মের পাশাপাশি তার লেখায় বেশ কয়েকটি ধারাবাহিক নাটক নির্মিত হয়, যেগুলো পায় জনপ্রিয়তা। এই খ্যাতিমানের লেখায় নির্মিত সেরা ১০টি ধারাবাহিকের মধ্যে শুরুতেই আছে ‘এইসব দিনরাত্রি’। হুমায়ূন আহমেদের লেখায় প্রথম ধারাবাহিক এটি। প্রচার হয় ১৯৮৫ সালে। ১৯৮৮ সালে বিটিভিতে প্রচারিত হয়েছিল ‘বহুব্রীহি’।

টেলিভিশন নাটকের ইতিহাসে অন্যতম সেরা ধারাবাহিক নাটক ‘অয়োময়’ প্রচার হয় ১৯৯১ সালে। টেলিভিশন নাটকের ইতিহাসে সবচেয়ে জনপ্রিয় ধারাবাহিক নাটক ‘কোথাও কেউ নেই’ প্রচারিত হয়েছিল ১৯৯৩ সালে। বিটিভির প্রযোজনায় নির্মিত প্রথম প্যাকেজ নাটক ‘নক্ষত্রের রাত’ (১৯৯৫)। ১৯৯৬ সালে বিটিভিতে প্রচারিত হয়েছিল ‘আজ রবিবার’। ধারাবাহিক নাটকটি নির্মাণ করেন মনির হোসেন জীবন। ১৯৯৭ সালে প্রচারিত হয়েছিল ‘সবুজ ছায়া’। ‘সবুজ সাথী’ প্রচারিত হয়েছিল ১৯৯৮ সালে। ২০০৪ সালে প্রচারিত হয়েছিল ‘উড়ে যায় বকপক্ষী’। একই বছরে প্রচার হয় ‘জোছনার ফুল’।

 

ফয়সাল আহমেদ

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com