অসুস্থ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিযার রোগমুক্তি কামনায় বরিশালের গৌরনদী উপজেলার পশ্চিম সমরশিংহ গ্রামে আয়োজিত মিলাদ ও দোয়ার অনুষ্ঠানে বুধবার বিকেলে অতর্কিতে হামলা চালিয়েছে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
এতে এক বিএনপি নেতার স্ত্রীসহ মিলাদ ও দোয়ার অনুষ্ঠানে অংশ নেয়া বিএনপির কমপক্ষে ১৫জন নেতা-কর্মী আহত হয়েছে। গুরুতর আহত ২জনকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। গৌরনদী উপজেলা বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক ও উপজেলার খাঞ্জাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি মোঃ ফজলুল হক সরদার জানান, বেগম খালেদা জিযার রোগমুক্তি কামনায় উপজেলার খাঞ্জাপুর ইউনিয়ন বিএনপির উদ্যোগে বুধবার বাদ আছর ওই ইউনিয়নের পশ্চিশ সমরসিংহ গ্রামে অবস্থিত তার নিজ বাড়ির সামনের আল নুর জামে মসজিদে মিলাদ ও দোয়ার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠান চলাকালে তারা খবর পান যে, তাদের অনুষ্ঠানে হামলা চালাতে ওই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মতলেব মাতুব্বর ও সাধারন সম্পাদক সেরনিয়াবাত গোলাম মোস্তফার নেতৃত্বে স্থানীয় আওয়ামী লীগের ৪০/৫০জন লোক লাঠিশোটা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে তাদের অনুষ্ঠানের দিকে আসছে।
তখন তারা মসজিদের ইমাম সাহেবকে ডেকে দ্রুত মোনাজাত দিয়ে অনুষ্ঠান শেষ করেন। এরপর দলীয় নেতা-কর্মীদের সাথে নিয়ে নিজ বাড়ির ভেতরে চলে যান। এর মধ্যেই আওয়ামী লীগের ৪০/৫০জনের দলটি সেখানে পৌছে বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর অতর্কিতে হামলা চালায়। হামলাকারীরা তখন খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি ও সাবেক ইউপি সদস্য মোঃ সাইদুল হাওলাদার (৭০)কে পিটিয়ে তার ডান পা ভেঙ্গে ফেলে এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ছাত্রদল কমী রাতুল মুন্সী (২৫)কে রক্তাক্ত যখম করে। গুরুতর আহত অবস্থায় ছাত্রদল কর্মী রাতুল মুন্সীকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বিএনপি নেতা ও সাবেক ইউপি সদস্য মোঃ সাইদুল হাওলাদারকে বরিশাল শহরের একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।
বিএনপি নেতা ফজলুল হক সরদার বলেন, হামলাকারীরা লাঠিশোটা ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে পিটিয়ে ও কুপিয়ে এ সময় আমার দলের কমপক্ষে ১৫জন নেতা-কর্মী আহত করেছে। হামলাকারীরা আমার বাড়িঘরে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে ইটের আঘাতে আমার স্ত্রী মনোয়ারা বেগম (৪৭) আহত হয়েছেন। হামলাকারীদের এলোপাতাড়ি পিটুনি ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে অপর আহতরা হলেন, উপজেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য মাষ্টার মজিবর ফকির (৬২), বিএনপি নেতা হান্নান শরীফ (৫৫), যুবদল নেতা জিয়া হাওলাদার(৪০), বিএনপি নেতা বারেক সরদার (৫৩), যুবদল নেতা খোকন হাওলাদার (৩৫), মনোয়ারা বেগম (৪৭), ইলিয়াস সরদার (৩২), জুয়েল মিয়া (৩২), মনির সরদার (৩৫), আবুল কালাম আজাদ (৪৫), লিটন হাওলাদার (৩২), বিএনপি নেতা আব্দুল হাই সরদার (৫২)। তারা সবাই স্থানীয় ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে খাঞ্জাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মতলেব মাতুব্বর বলেন, আমরা কারো উপর হামলা করিনি। বুধবার বিকেলে খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আহাম্মদকাঠী স্কুলে ১৫আগষ্টের শোক দিবসের অনুষ্ঠান ছিল। আমাদের নেতাকর্মীরা দলবেধে ওই অনুষ্ঠানে রওনা হলে বিএনপির লোকজন আমাদের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালায়।