বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখে পাল্টে গেছে অনেক কিছু। ছাত্র-জনতার এক দফা দাবির মুখে সরকার পতন ঘটে। গেল ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ ছেড়েছেন শেখ হাসিনা। গঠিত হয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
এদিকে, মুক্তিকামী মানুষের অনত্যম একটি হাতিয়ার গান। তার জ্বলন্ত উদাহরণ ১৯৭১। যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের প্রচারিত গানগুলো মানুষকে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের প্রেরণা যুগিয়েছে। যা ছিনিয়ে এনেছে স্বাধীনতা।
এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। ২০২৪-এ ছাত্র আন্দোলনকে আরও বেগবান করতে গানের ভূমিকা ছিল অন্যতম। সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা শুরুর পর থেকেই প্রকাশ হতে থাকে এসব গান। এর মধ্যে র্যাপ গানের সংখ্যাই ছিল চোখে পড়ার মতো। এসব গানের ভিড়ে আলোচনায় থাকা দুটি গান- ‘আওয়াজ উডা’ ও ‘কথা ক’।
‘আওয়াজ উডা’ গানের জন্য এর শিল্পী হান্নান হোসাইন শিমুলকে যেতে হয়েছে আদালতেও। আর ‘কথা ক’র শিল্পী মুহাম্মদ সেজানকেও দেওয়া হয় নানা হুমকি। তবুও দমানো যায়নি এই র্যাপ গায়কদের। গানগুলো তৈরির পেছনের গল্প নিয়ে কথা বলেছেন হান্নান ও সেজান।
হান্নান বলেন, ‘আন্দোলনে আমার ভাই-বোনদের রাস্তায় মারা হচ্ছিল। আবু সাঈদের মতো অনেক শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন। সেই সময় আর চুপ থাকার অবস্থায় ছিলাম না। ভাবছিলাম আমার অবস্থান থেকে কিছু একটা করার। সেই চেষ্টা থেকেই “আওয়াজ উডা”। লেখা শুরু করার পর অটোমেটিক গানের কথাগুলো চলে আসছিল। মাত্র আড়াই ঘণ্টায় লিখেছিলাম গানটি।’
সেজান বলেন, ‘জেদ থেকেই “কথা ক” গানটি লেখা। যেকোনো মানুষের দাবি থাকতেই পারে। সেটা নিয়ে যদি অত্যাচার করা হয়, তাহলে আমাদের স্বাধীনতা কোথায়। এমন অনেক প্রশ্ন মাথায় নিয়েই গানটি লিখেছি।’
উল্লেখ্য, হান্নান ও সেজান দু’জনের বাড়িই নারায়ণগঞ্জে। র্যাপে দুজনের পথচলাও সমসাময়িক। র্যাপ সংগীতে তাদের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু ২০১৮ সালে। হান্নানের প্রথম গান ‘ডিসকাউন্ট’ আর সেজানের ‘সাইড ল’। এরপর থেকে নিয়মিত র্যাপের সঙ্গেই যুক্ত আছেন হান্নান ও সেজান।