সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির একতরফা নির্বাচনে ভোট চুরির প্রতিবাদে রাজপথে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপিসমর্থক আইনজীবীরা।
সোমবার বেলা সাড়ে ১২টায় সুপ্রিম কোর্ট বারে পুনঃনির্বাচন, সাংবাদিক ও বিজ্ঞ আইনজীবীদের ওপর পুলিশের বর্বরোচিত নির্যাতন এবং আইনজীবী নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়েরের প্রতিবাদে শত শত আইনজীবী বিক্ষোভ করেন। জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম এ বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে।
সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফেরামের সভাপতি এ জে মোহাম্মদ আলী, ফোরামের মহাসচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, বিএনপি সমর্থিত জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য (নীল) প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন সম্পাদক প্রার্থী ও সাবেক সম্পাদক মো: রুহুল কুদ্দুস কাজলের নেতৃত্বে কয়েক শ’ আইনজীবী বিক্ষোভ মিছিল করে হাইকোর্ট মাজার গেট দিয়ে রাজপথে প্রবেশ করেন। বিক্ষোভ মিছিলটি কদম ফোয়ারা ও জাতীয় ঈদগাহ মায়দানের সামনে এলে আইনজীবীরা কদম ফোয়ারার পাশে রাজপথে বসে পড়েন। কদম ফোয়ারা ও জাতীয় ঈদগাহ মায়দানের সামনের রাস্তায় আইনজীবীরা সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন। এসময় আইনজীবীরা সুপ্রিম কোর্ট বারে ভোট চুরির প্রতিবাদে প্রধানমন্ত্রী, আইনমন্ত্রী ও অ্যাটর্নি জেনারেলের পদত্যাগের দাবিতে স্লোগান দেন।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশে সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলীর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বিএনপি সমর্থিত নীল প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, সম্পাদক প্রার্থী ও সাবেক সম্পাদক মো: রুহুল কুদ্দুস কাজল, বিএনপির আইন সম্পাদক কায়সার কামাল, বিএনপির আন্তর্জাতিক সম্পাদক মাসুদ আহমেদ তালুকদার, আইনজীবী ফোরাম সুপ্রিম কোর্ট ইউনিটের সভাপতি আবদুল জব্বার ভূইয়া, সাধারণ সম্পাদক গাজী কামরুল ইসলাম সজল, ঢাকা বার ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক ফারুকী প্রমুখ।
এসময় রাজপথে বিক্ষোভে অংশ নেন আইনজীবী আবেদ রাজা, খোরশেদ মিয়া আলম, মোহাম্মদ আলী, মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, মো: আক্তারুজ্জামান, মোরশেদ আল মামুন লিটন, নির্বাচনে সহসভাপতি প্রার্থী হুমায়ুন কবির মঞ্জু. কোষাধ্যক্ষ প্রার্থী রেজাউল করিম, সহ-সম্পাদক প্রার্থী মাহফুজুর রহমান মিলন, মো: আব্দুল করিম, সুপ্রিম কোর্ট বারের বর্তমান ট্রেজারার মো: কামাল হোসেন, সহ-সম্পাদক মাহফুজ বিন ইউসুফ, মো: মাহবুবুর রহমান খান মো: জহিরুল ইসলাম সুমন, আনিছুর রহমান খান, মো: মাকসুদ উল্লাহ, মু: কাইয়ুম প্রমুখ।
আইনজীবী সমাবেশে সভাপতি প্রার্থী এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, সুপ্রিম কোর্ট বারে পুলিশ ঢুকিয়ে তারা ভোট ডাকাতি করেছে। আগামীতে তারা বিচার ডাকাতি করবে। সুতারং প্রধান বিচারপতি পুলিশ দিয়ে হামলার বিচার করতে হবে। সুপ্রিম কোর্টে কলঙ্কজনক ঘটনার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে হবে। সুপ্রিম কোর্টে কোনো নির্বাচন হয়নি। ভোটের নামে হঠাৎ করে সুপ্রিম কোর্টে পুলিশ প্রবেশ করল। সাংবাদিক আইনজীবীদের পেটালো নিগৃহীত করা হলো। ভোটকেন্দ্র থেকে সবাইকে বের করে দিলো। তারা সরকার সমর্থকরা পুলিশের মাধ্যমে ভোটকেন্দ্র দখল করল। প্রধান বিচারপতিসহ আপিল বিভাগের কোনো বিচারপতি সুপ্রিম কোর্টে পুলিশ প্রবেশের অনুমতি দেননি। সুপ্রিম কোর্টে পুলিশ প্রবেশ করে আইনজীবী ও সাংবাদিকদের মারধর করার কারণে আইনমন্ত্রী ও অ্যাটর্নি জেনারেলকে পদত্যাগ করতে হবে। সুপ্রিম কোর্ট বারে নতুন করে নির্বাচন দিতে হবে। অন্যথায় অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলন চলছে, চলবে।
বিএনপি’র আইন সম্পাদক আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব কায়সার কামাল বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হয়েছে, চক্রান্ত হয়েছে। আইনজীবী সমাজ রাজপথে নেমে এসেছে। বেগম খালেদা জিয়ার ন্যায়বিচার রাজপথে হবে, ইনশা আল্লাহ। অবিলম্বে সুপ্রিম কোর্ট বারে নির্বাচন দিতে হবে। আইনমন্ত্রী ও অ্যাটর্নি জেনারেলকে পদত্যাগ করতে হবে। অন্যথায় আইনজীবী সমাজ রাস্তায় নেমেছে। আর রাস্তা থেকে উঠবে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা কায়েম করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে এ জে মোহাম্মদ আলী বলেন, সুপ্রিম কোর্টে, হাইকোর্টে পুলিশ অযাচিত হামলা করেছে। আমাদের একটাই দাবি এই সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরব না। আন্দোলন চালিয়ে যাব।