চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে ইসকন (আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ) সদস্যদের হামলায় এক আইনজীবী নিহত হয়েছেন।
ওই আইনজীবীর নাম সাইফুল ইসলাম আলিফ। তার বাড়ি চট্টগ্রামের লোহাগড়া উপজেলায়।
আজ মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক নিবেদিকা ঘোষ। তিনি বলেন, আদালত প্রাঙ্গণে সংঘর্ষের ঘটনায় আহত হয়ে আরও সাতজন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর সরওয়ার হোসেন লাভলু বলেন, ইসকন সদস্যরা আদালতে তাণ্ডব চালিয়েছে। তারা এক আইনজীবীকে কুপিয়ে ও পাথর মেরে হত্যা করেছে। এই হত্যাকাণ্ডের বিচার ও দ্রুত ইসকনকে নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জাতীয় পতাকার অবমাননার অভিযোগে রাষ্টদ্রোহ মামলায় ইসকনের বহিস্কৃত নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। আজ দুপুর পৌনে ১২টার দিকে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী শরীফুল ইসলাম আদালত এই আদেশ দেন। শুনানির পর ইসকন নেতাকে বহনকারী পুলিশের প্রিজনভ্যান আড়াই ঘণ্টা আটকে রাখে বিক্ষোভ করেন ইসকন সদস্যরা। পরে ২টা ৪৫ মিনিটে পুলিশ টিয়ারগ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
পরে ইসকন সদস্যরা বিভিন্ন গলিতে প্রবেশ করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। তারা আদালতের কেন্দ্রীয় মসজিদের জানালার কাচ ভাঙচুর করার অভিযোগ করেন মুসল্লিরা। এ ছাড়া আইনজীবীদের তিনটি প্রাইভেটকার ও পাঁচটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। আদালত চত্বর এলাকায় রঙ্গন কমিউনিটি সেন্টার হলের গলিতে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কোপাতে থাকে ইসকন সদস্যরা। পরে তার মাথায় পাথর দিয়ে আঘাত করা হয়। সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
চট্টগ্রাম কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফজলুল কাদের চৌধুরী বলেন, ইসকনের বহিষ্কৃত নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে বহন করা প্রিজনভ্যান আদালত প্রাঙ্গণে আড়াই ঘণ্টা আটকে রাখা হয়। আজ দুপুর পৌনে ১২টা থেকে ইসকন সদস্যরা আদালতে প্রিজনভ্যান আটকে রাখে। পরে রাস্তা ফাঁকা করতে পুলিশ টিয়ারগ্যাস ছুড়লে ইসকন কর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে বিভিন্ন ভবনে ও গাড়িতে হামলা শুরু করে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে চেষ্টা করছে।