শুক্রবার, ০৬:৪৩ অপরাহ্ন, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।

অদৃশ্য কারণে সরকারি ৫ ব্যাংকের বিশেষ অডিট বন্ধ

সময়ের কণ্ঠধ্বনি ডেস্ক:
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ২২ আগস্ট, ২০২২
  • ৬৬ বার পঠিত

কোনো এক অদৃশ্য কারণে সরকারি পাঁচ ব্যাংকের বিশেষ অডিট কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে না। গত ২০১৯ সালের মে মাসে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল সোনালী, জনতা, অগ্রণী, রূপালী ও বেসিক ব্যাংকের বিশেষ অডিট কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। অডিট চালানোর জন্য নিরীক্ষা ফার্ম নিয়োগ ও এর কার্যক্রমের সাথে সমন্বয় করার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের একজন অতিরিক্ত সচিবকে আহ্বায়ক করে আট সদস্যের একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছিল। তারপরও এ বিষয়ে তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি। যেসব কর্মকর্তা নিয়ে এই কমিটি গঠন করা হয়েছিল কেউই এখন আর আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে কর্মরত নেই। এর মধ্যে একজন আবার বছর খানেক আগে অবসরেও চলে গেছেন।

জানা গেছে, এই অডিট কার্যক্রম প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে প্রভাবশালীদের চাপও রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, অর্থমন্ত্রীর নির্দেশনায় ২০১৯ সালে খেলাপি ঋণ ও অর্থ পাচারের তথ্য খতিয়ে দেখতে এই অডিট কার্যক্রম চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল। কিন্তু গত দুই বছর করোনাজনিত পরিস্থিতির কারণে এই বিষয়ে তেমন অগ্রগতি হয়নি। এই পরিস্থিতির কারণে অডিট কার্যক্রম চালানোর জন্য ফার্ম নিয়োগ করা সম্ভব হয়নি। কবে নাগাদ এই ফার্ম নিয়োগ দেয়া হবে এ বিষয়েও আমাদের কাছে কোনো তথ্য নেই। কারণ এখন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে নতুন সচিবসহ বেশির ভাগ কর্মকর্তাই নতুনভাবে বদলি হয়ে এসেছেন। এখন এই বিষয়ে আমাদের কাছে নতুন কোনো নির্দেশনা নেই।

তবে অন্য এক সূত্র জানিয়েছেন, চলতি বছরের শুরুতে বিশেষ অডিট পরিচালনা জন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। কিন্তু এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। এ ক্ষেত্রে ঊর্ধ্বতন মহল থেকে একটি চাপ রয়েছে জানা গেছে। তাই বিষয়টি নিয়ে বেশি দূর অগ্রসর হওয়া যায়নি।

সূত্র জানায়, অর্থমন্ত্রীর নির্দেশনায় ২০১৯ সালে সোনালী, জনতা, অগ্রণী, রূপালী ও বেসিক ব্যাংকের ২০১৬, ২০১৭ ও ২০১৮ সালের কার্যক্রমের ওপর আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ এ নিরীক্ষা পরিচালনা করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল। এই জন্য একটি কমিটিও গঠন করা হয়। কিন্তু আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে এ প্রক্রিয়া শুরু করতে কয়েক মাস চলে যায়। এরপর নতুন করে অডিট ফার্ম নিয়োগ করার প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য এ সম্পর্কিত কমিটি পুনর্গঠন করা হয়। আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের তৎকালীন অতিরিক্ত সচিব জাকিয়া সুলতানাকে আহ্বায়ক করে গঠিত কমিটির অন্যান্য সদস্যের মধ্যে ছিলেন, একই বিভাগের যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ শুকুর আলী, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ হুমায়ূন কবীর, সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক যথাক্রমে, মোহাম্মদ এবনুজ জাহান, মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন, মোহাম্মদ ইউসুফ আলী এবং বেলায়েত হোসেন, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের উপসচিব (বর্তমানে যুগ্ম সচিব) মৃত্যুঞ্জয় সাহা এবং বেসিক ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক এ কে এম মাসুদ-উর রহমান।

কমিটির কার্যপরিধি সম্পর্কে বলা হয়েছিল- এই কমিটি বিশেষ নিরীক্ষা কার্যক্রম সম্পাদনের লক্ষ্যে অডিট ফার্ম নিয়োগের জন্য পিপিআর ২০০৮ (সরকারি ক্রয় নীতিমালা) অনুযায়ী সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব প্রণয়ন করবে। বিশেষ অডিট কার্যক্রম পরিধি নির্ধারণসহ বাংলাদেশ ব্যাংক নিরীক্ষা ফার্ম, ব্যাংকসমূহ ও সিএ ফার্মের সাথে সমন্বয় সাধন করবে। সিএ ফার্মকে নির্ধারিত ছক অনুযায়ী ও অন্যান্য তথ্য প্রদানসহ যাবতীয় সহায়তা প্রদান করবে। অডিট প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ব্যাংকিং খাতে ঋণ ব্যবস্থাপনার প্রয়োজনীয় সংস্কার আনয়নের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় নির্ধারণে উদ্যোগ গ্রহণ। ওয়ার্কি কমিটি ১৫ দিন পরপর সভা করে নিরীক্ষা কার্যক্রমের অগ্রগতি সচিব/মুখ্য হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার কাছে উপস্থাপন করবে। সুষ্ঠু ও ফলপ্রসূভাবে নিরীক্ষা সম্পাদনে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সময়ে সময়ে প্রদত্ত দিকনির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। কমিটি প্রয়োজনে ব্যাংক ও আর্থিক সংশ্লিষ্ট বিষয়ে যেকোনো কর্মকর্তাকে কো-অপ্ট করতে পারবে। এছাড়াও কমিটির কার্যপরিধির মধ্যে বলা হয়েছে, এগুলো ছাড়াও কমিটি বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক ২০১৯ সালে ১৫ মে জারিকৃত বিআরপিডি সার্কুলার নং-৫ এর আওতায় গ্রাহক কর্তৃক পুনঃতফসিল ও এককালীন এক্সিট সংক্রান্ত প্রতিটি আবেদনের বিষয়ে ব্যাংক ভিত্তিক তথ্য সংগ্রহ করে গৃহীত কার্যবলী হালনাগাদ অগ্রগতি পর্যক্ষেবণ করবে।

এর আগে একই বছর (২০১৯) আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে ৫ রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাংকের এমডিদের কাছে এ বিষয়ে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছিল। এই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ‘সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে গেছে। পাশাপাশি দেশ থেকে অবৈধ পন্থায় টাকা পাচারের বিষয় সংবাদমাধ্যমগুলোতে বিভিন্ন সংস্থার প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে। এসব ঘটনায় সরকার নিরপেক্ষ অডিট ফার্ম দিয়ে খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com