অন্য ভাষায় :
শনিবার, ০৩:৫৯ অপরাহ্ন, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।

সাকিবের অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে সিরিজ নিশ্চিত করল বাংলাদেশ

সময়ের কণ্ঠধ্বনি ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ২৯ মার্চ, ২০২৩
  • ৪৬ বার পঠিত

ব্যাটে-বলে চট্টগ্রামে জ্বলে উঠেন সাকিব আল হাসান। ব্যাট হাতে অপরাজিত ৩৮ রানের পর বল হাতে ৫ উইকেট; সম্মুখ থেকে নেতৃত্ব দিয়েই জিতিয়েছেন দলকে। দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ জয় পেয়েছে ৭৭ রানে। এই জয়ে সিরিজটাও নিজেদের করে নিয়েছে বাংলাদেশ। সেই সাথে নিজেদের টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে প্রথমবার টানা পাঁচ ম্যাচ জয়ের স্বাদ পেল টাইগাররা।

এর আগে বৃষ্টি বাঁধায় নির্ধারিত সময় থেকে দেড় ঘণ্টারও বেশি সময় পর শুরু হয় আজকের খেলা। দুপুর ২টায় খেলা শুরু হবার কথা থাকলেও ম্যাচ শুরু হয় ৩টা ৪০ মিনিটে। ভিজে মাঠে বোলাররা সুবিধা পেয়ে থাকেন সাধারণত, ফলে ভয়ে ছিল বাংলাদেশের সমর্থকেরা। কেননা টসে হেরে আগে ব্যাট করবে যে টাইগাররাই।

কিন্তু বৃষ্টিতেও উত্তাপ কমেনি বাংলাদেশের উদ্বোধনী জুটির, আগের ম্যাচের ধারাবাহিকতা ধরে রেখে আজো জ্বলে উঠেন লিটন-রনিরা। তাদের কাছে যেন কিংকর্তব্যবিমুঢ় ছিল আইরিশ বোলাররা। দু’জনের বিদায়ের পর ফিনিশিংটা টানেন সাকিব-হৃদয় জুটি, তারাও ছিলেন বিধ্বংসী। সুবাদে আজো ২০০ পেরিয়েছে বাংলাদেশের সংগ্রহ, ৩ উইকেটে ২০২ রান করেছে টাইগাররা।

টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে সিরিজের প্রথম ম্যাচের মতোই মারমুখী হয়ে উঠেন দুই ওপেনার।
আগের ম্যাচেই পাওয়ার প্লেতে নিজেদের ইতিহাসের সর্বোচ্চ ৮১ রান তুলেছিল বাংলাদেশ। আজ হয়তো ছাপিয়ে যেতে পারতো তাকেও, তবে বৃষ্টির কারণে ম্যাচের ওভার কমে আসায় তা আর সম্ভব হয়নি। ৫ ওভারের পাওয়ার প্লেতে ৭৩ রান তুলেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে বাংলাদেশকে।

ইয়ান বিশপকে সত্য প্রমাণ করতেই যেন আজ মাঠে নেমেছিলেন লিটন, ২০১৯ বিশ্বকাপের এক ম্যাচে তার ব্যাটিং দেখে মুগ্ধ হয়ে ‘মোনালিসার সাথে তুলনা দিয়েছিলেন তার ব্যাটিংকে। ভুল বলেননি অবশ্য, তার দিনে ব্যাটিংটা যে তার হয়ে উঠে মোনালিসাই বটে, আর তিনি স্বয়ং যেনো লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি! জাদুকরি ব্যাটিংয়ে সবাইকে সম্মোহিত করে তুলেন, বাধ্য করেন মুগ্ধ হতে।

পাওয়ার প্লেতেই ব্যক্তিগত অর্ধশতক পূরণ করে ফেলেন লিটন। ভেঙে দেন গত দেড় যুগের অক্ষত রেকর্ড, আশরাফুল ছাপিয়ে বাংলাদেশের দ্রুততম ফিফটির মালিক বনে যান লিটন। মাত্র ১৮ বলে ৫ চার ৩ ছক্কায় এই রেকর্ড গড়েন লিটন। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, এই সময়ে একটা ডট বলও খেলেননি লিটন। শতক স্পর্শ করার সম্ভাবনা আর সুযোগ দুটোই ছিল লিটনের সম্মুখে, তবে ৪১ বলে ৮৩ রানেই থামতে হয় তাকে। ১০ চার ও ৩ ছক্কায় লিটন তার ইনিংস সাজান।

এদিকে গতকাল যেখানে থেমেছিলেন সেখান থেকেই যেন আজ শুরু করলেন রনি তালুকদার। শুরু থেকেই লিটনের সাথে আগ্রাসী মেজাজে ব্যাট করতে থাকেন তিনি। তবে আজ আর ফিফটির দেখা পাওয়া হয়নি, ২৩ বলে ৪৪ বলে ফেরেন রনি৷ তবে আউট হবার আগে নতুন এক রেকর্ডে লিখে যান নিজের নাম। টি-টোয়েন্টিতে দেশের হয়ে লিটনের সাথে উদ্বোধনী জুটিতে সর্বোচ্চ ১২৪ রানের সংগ্রহ এনে দিয়ে যান তিনি।

১২তম ওভারের শেষ বলে লিটন আউট হলে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ২ উইকেটে ১৩৮ রান। তবে এরপর জ্বলে উঠেন সাকিব আল হাসান। ফর্মের তুঙ্গে থাকা বাংলাদেশ অধিনায়ক ব্যাট হাতে নেতৃত্ব দেন সম্মুখ থেকেই। তাকে যোগ্য সঙ্গ দেন তাওহীদ হৃদয়। দু’জনে জুটি থেকে আসে ৩৩ বলে ৬১ রান। সাকিব ২৪ বলে ৩৮ রানে অপরাজিত থাকলেও, হৃদয় আউট হন ১৩ বলে ২৪ রানে। ২০২ রান যোগ হয় বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডে।

ব্যাট হাতে বিশাল লক্ষ্য ছুড়ে দেবার পর বল হাতে বসে থাকেনি টাইগাররা, একদম প্রথম বল থেকেই আক্রমণে যায় তারা। প্রথম ওভারের প্রথম বলেই পল স্টার্লিংকে ফেরান তাসকিন, কোন রান যোগ করার সুযোগ হয়নি তার। পরের ওভারের প্রথম বলেই আবার সাকিব আল হাসানের আঘাত, শিকার হন লরকান টাকার।

সেখানেই শিকারের স্বাদ পেয়ে যান সাকিব আল হাসান। লরকানকে ফেরানোর পর একে একে শিকার করেন আরো চার উইকেট। ফেরান রস অ্যাডাইর, হ্যারি টেক্টর, গ্যারেথ ডিলানি, জর্জে ডকরেলকে। নিজের নির্ধারিত ৪ ওভার শেষ করেন ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেরা বোলিং রেকর্ড ২২/৫ নিয়ে।

সাকিব একাই ভেঙে দেন আইরিশদের ব্যাটিংয়ের মেরুদণ্ড। ৫ বলে ৫ রান করা লরকান টাকারকে প্রথম বলেই রনি তালুকদারের ক্যাচ বানান তিনি। পরের ওভারে এসেও প্রথম বলে পান উইকেটের দেখা, ভাঙেন রস অ্যাডাইরের (৬) উইকেট। সেই ওভারেরই শেষ গ্যারেথ ডিলানিকে (৬) উইকেটের পেছনে লিটনের ক্যাচ বানান।

প্রথম দুই ওভারে ৩ উইকেট নেয়া সাকিব নিজের তৃতীয় ওভারে এসেও পান ২ উইকেট। এবার ওভারের তৃতীয় বলে জর্জে ডকরেলকে (২) এলবিডব্লুরর ফাঁদে ফেলেন তিনি, আর শেষ বলে ১৬ বলে ২২ রান করা হ্যারি টেক্টরের স্ট্যাম্প ভাঙেন সাকিব। প্রথম ৩ ওভারে মাত্র ১৪ রান দেয়ায় ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড হাতছানি দিচ্ছিল সাকিবে, তবে শেষ ওভারের শেষ বলে ৪ খেয়ে সেই সুযোগ হাতছাড়া করেন সাকিব।

এরপর মার্ক অ্যাডাইরকে সাথে নিয়ে ২৬ বলে ৩১ রানের জুটি গড়েন কার্টিস ক্যাম্ফার। সেই জুটি ভাঙেন হাসান মাহমুদ, ৬ রান করা মার্ককে ফেরান তিনি। এক ওভার পরেই নিজের দ্বিতীয় শিকার খুঁজে নেন তাসকিন আহমেদ, এলবিডব্লুর ফাঁদে ফেলেন ফিয়ন হ্যান্ডকে। যখন ১২ বলে প্রয়োজন ৮৭ রান, তখন নিজের তৃতীয় শিকারেরে দেখা পান তাসকিন, স্ট্যাম্প ভাঙেন কার্টিস ক্যাম্ফারের। তার ব্যাটে আসে ইনিংস সর্বোচ্চ ৩০ বলে ৫০ রান।

শেষ পর্যন্ত যদিও অলআউট করা যায়নি আয়ারল্যান্ডকে। ৯ উইকেট হারিয়ে ১২৫ রানে থামে তাদের ইনিংস। বাংলাদেশ জিতে যায় ৭৭ রানে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com