সোমবার, ০৬:২২ পূর্বাহ্ন, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ৩রা অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।

মাঠপ্রশাসনে পুলিশের ‘নির্বাচনী পোস্টিং’

সময়ের কণ্ঠধ্বনি ডেস্ক:
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ৩০ জুলাই, ২০২২
  • ৯২ বার পঠিত

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হতে দেড় বছরের বেশি সময় বাকি। নির্বাচন সামনে রেখে এখনই পুলিশের মাঠপ্রশাসন ঢেলে সাজানোর কাজ শুরু হয়েছে। এসপি থেকে শুরু করে অতিরিক্ত আইজি পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় পদায়নের ক্ষেত্রে আগামী সংসদ নির্বাচন মাথায় রাখা হচ্ছে। সে অনুযায়ী ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি রেঞ্জে পুলিশের ডিআইজি, অতিরিক্ত ডিআইজি এবং মহানগরের পুলিশ কমিশনার ও অতিরিক্ত কমিশনার পদায়ন করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

মাঠপ্রশাসনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদ পুলিশ সুপারের (এসপি)। শিগগিরই অন্তত ২৯টি জেলায় নতুন পুলিশ সুপার (এসপি) পদায়ন করা হচ্ছে। পদোন্নতি পেয়ে অতিরিক্ত ডিআইজি হওয়ার কারণে এরই মধ্যে ২৫ জেলার এসপি পদ শূন্য হয়েছে। ২৫ জেলায় নতুন এসপির পাশাপাশি প্রশাসনিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ আরও অন্তত ৪টি জেলায় পুলিশ সুপার পদেও নতুন মুখ আসছে। এসব পদায়ন-বদলিতে রাজনৈতিক আদর্শ, সক্ষমতা ও সরকারের প্রতি আনুগত্যের দিকও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশ সদর দপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, শৃঙ্খলা না ভাঙলে সাধারণত দুই বছরের আগে নতুন পদায়ন পাওয়া কর্মকর্তাকে সরানো হয় না। সে হিসেবে এখন যাদের নতুন কর্মস্থলে পদায়ন করা হবে, তারা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত একই এলাকা বা দায়িত্বে থাকবেন।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা আরও বলছেন, সব সরকারের আমলেই নির্বাচনের আগে গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় পদায়নের ক্ষেত্রে নির্বাচন মাথায় রাখা হয়।

সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০২৩ সালের শেষে কিংবা ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা। সেক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ সরকারের মেয়াদ রয়েছে দেড় বছরেরও কম। এ সময়ে সরকারকে নানা ধরনের চাপে ফেলার আশঙ্কা রয়েছে। একদিকে সরকারবিরোধীদের আন্দোলন, অন্যদিকে প্রশাসনের ভেতরের নানা ধরনের ষড়যন্ত্র তৈরি হতে পারে। তাই আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নির্বাচন সামনে রেখে মাঠপ্রশাসনকে ঢেলে সাজানো হচ্ছে। একযোগে বিপুলসংখ্যক এসপিকে আসন্ন নির্বাচন মাথায় রেখেই পোস্টিং দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে পুলিশের ডিআইজি থেকে থানার ওসিদের একইভাবে পদায়নের পরিকল্পনা রয়েছে।

পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, একযোগে ২৫ জেলার এসপি পদ ফাঁকা হওয়ার পর থেকেই জেলার এসপি হতে তদবির শুরু হয়েছে। রাজনৈতিক নেতা ও আমলাদের দিয়েও তদবির করানোর খবর পাওয়া যাচ্ছে। তবে রাজনৈতিক আদর্শ ও আনুগত্য বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে। কারণ এই মাঠপ্রশাসনের ওপরই স্ষ্ঠুু নির্বাচনের বিষয়টি নির্ভর করবে। তাই পদায়নের ক্ষেত্রে নির্বাচনকে মূল ভাবনায় রাখা হচ্ছে।

জানা গেছে, যেসব কর্মকর্তাকে জেলা পুলিশ সুপার হিসেবে পদায়ন করা হচ্ছে, ইতোমধ্যে একাধিক সংস্থার মাধ্যমে তাদের বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হয়েছে। এসপি পদে পদায়নে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র সচিব ও পুলিশের মহাপরিদর্শক কয়েক দফা বৈঠক করেছেন। সবকিছু ঠিক থাকলে এ সপ্তাহেই পুলিশ সুপারদের পদায়নের প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।

এসপি পদ ফাঁকা হওয়া জেলার মধ্যে রয়েছে- ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, ফরিদপুর, কিশোরগঞ্জ, শরীয়তপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট, সুনামগঞ্জ, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, কুমিল্লা, রাঙামাটি, খুলনা, ঝিনাইদহ, নড়াইল, রংপুর, দিনাজপুর, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নীলফামারী, সিরাজগঞ্জ, নাটোর, পাবনা, বরিশাল ও পটুয়াখালী। এর বাইরে আরও চারটি জেলার পুলিশ সুপার পদে রদবদলের কথা শোনা যাচ্ছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আগে এসপির সংখ্যা কম থাকায় অনেকে একাধিক জেলায় পুলিশ সুপার হওয়ার সুযোগ পেতেন। এখন এসপির পদ বাড়ায় প্রতিদ্বন্দ্বী বেড়েছে। তবে নির্বাচনের আগে পদোন্নতি ও পদায়নের ক্ষেত্রে ভালোভাবে স্ক্যানিং করতে ঊর্ধ্বতন মহল থেকে নির্দেশনা রয়েছে। রাষ্ট্রের নীতির প্রতি ওই কর্মকর্তা কতটা অনুগত, সেটাও যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। নির্বাচনমুখী পদায়নে সরকারি দলের অতি আস্থাভাজনদের এগিয়ে রাখা হয়েছে। ছাত্রজীবনে যাদের ক্ষমতাসীন দলের ভালো ক্যারিয়ার রয়েছে, তারা এগিয়ে আছেন অপেক্ষাকৃত ভালো পোস্টিং পাওয়ার ক্ষেত্রে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com